ইবি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ

ব্যয় সংকোচনে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বন্ধ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ১১:৩৫ এএম, ২৮ জানুয়ারি ২০২৪

অর্থ সংকটে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতির কারণে পর্যাপ্ত অর্থ না পাওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। ফলে গত ডিসেম্বর মাস থেকে স্কুলটির শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বন্ধ রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রতিষ্ঠার পর প্রায় ২৮ বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার জন্য ভর্তুকি দিয়ে আসছে বিশ্ববিদ্যালয়। ইউজিসি থেকে প্রতিবছর স্কুলের জন্য মাত্র বিশ লাখ টাকা থোক বরাদ্দ দেওয়া হলেও প্রতিবছর স্কুলের ব্যয় বাবদ এক কোটি বিশ লাখ টাকা দিতে হয়। বাকি টাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন খাত থেকে ধার করে দিয়ে আসছে। সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় পূর্বের মতো পর্যাপ্ত অর্থ পাচ্ছে না। এছাড়া বর্তমানে কোনো ফান্ডেও পর্যাপ্ত অর্থ নেই। এজন্য স্কুল শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দেওয়াও সম্ভব হচ্ছে না।

স্কুলটির শিক্ষক-কর্মকর্তাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে স্কুলের জনবলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব ইসলামিক এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইআইইআর) এর ডেমনেস্ট্রেশন ইউনিটের জনবল হিসেবে আত্মীকরণ করা হয়েছে এবং সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজের জনবলের মতো বেতন দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজস্ব শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দিলেও স্কুলের জনবলের বেতন বন্ধ করে রেখেছে। বিশ্ববিদল্যায় চাইলে অন্য কোনো খাত থেকে নিয়ে বেতন দিতে পারে কিন্তু তারা সেটি করছে না। ফলে বেতন বন্ধ হওয়ায় শিক্ষকদের পারিবার নিয়ে কষ্টে দিন পার করতে হচ্ছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়কে ইউজিসি ও মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে বেতন-ভাতার ব্যবস্থা করার দাবি জানান।

এদিকে বেতন-ভাতার দাবিতে শনিবার (২৭ জানুয়ারি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন করেছেন স্কুলটির শিক্ষকরা। বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন। এতে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুজাম্মিল হক মোল্লাহ, সহকারী শিক্ষক গোলাম মামুন, গোলাম কিবরিয়া, আব্দুল আলীম, আনজুমান আরাসহ অন্য শিক্ষক-কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষকরা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের দুই শতাধিক শিক্ষার্থীকে মানববন্ধনে নিয়ে আসেন। তারা শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রদানের দাবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন। তবে বেতনের দাবিতে শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে মানববন্ধনের বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দাবি, স্কুলটির শিক্ষার মান উন্নয়ন করে পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারলে নিজস্ব আয় দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হতে পারে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়কে ভর্তুকির বোঝা বইতে হবে না। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তারা।

আইআইইআর’র পরিচলাক অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান বলেন, আইআইইআর শুধু পরিচালনার দায়িত্বে আছে। বেতন দেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। এতদিন আইআইইআরের ফান্ড থেকে ধার নিয়ে ও অন্যান্য খাত থেকে নিয়ে বেতন দেওয়া হয়েছে। এখন আমাদের ফান্ডেও অর্থ নেই। এজন্য উদ্ভূত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব শাখার পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, ইউজিসি যে টাকা দেয় সেটা দিয়ে দুই বা তিন মাসের বেতন দেওয়া যায়। বাকি মাসের বেতন-ভাতা বিভিন্ন খাত থেকে দেওয়া হচ্ছিল। সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতির কারণে এখন পর্যাপ্ত অর্থ পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে অন্যান্য খাতেও অর্থ সংকট রয়েছে। এজন্য তাদের বেতন-ভাতা দেওয়া যায়নি।

উপাচার্য অধ্যাপক শেখ আবদুস সালাম বলেন, স্কুলের জনবলের বেতন কাঠামো সুনির্দিষ্ট করতে ও এ জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিও করার লক্ষ্যে ইউজিসি একটি কমিটি করেছে। আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করছি। দ্রুতই একটি স্থায়ী সমাধান হবে বলে আশা করি।

এফএ/এসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।