সাড়ে ৪ হাজার বই নিয়ে রাবিতে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৮:৩১ এএম, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

পরিপাটি সাজানো ছোট একটি কক্ষ। তার দেওয়াল জুড়ে সাজানো রয়েছে বঙ্গবন্ধু সংগ্রামী জীবনের নানা স্থিরচিত্র। রয়েছে ম্যুারাল আর মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ নিয়ে নানা রকমের স্মারক। কক্ষে সারিবদ্ধভাবে সাজানো রয়েছে মাঝারি আকারের ছয়টি বইয়ের সেলফ। তাকে থরেথরে সাজানো রয়েছে নতুন পুরাতন হাজারো বই। সেলফের পাশেই তিনটি টেবিল, বসার জন্য রয়েছে ১৫-২০ টি চেয়ার। দেখেই বুঝা যায় ছোটখাটো লাইব্রেরি।

নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশপ্রেম, ব্যক্তিত্ব, প্রজ্ঞা ও দর্শন তুলে ধরতেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালায় তৈরি করা হয়েছে এ ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’।

কর্নারটিতে রয়েছে প্রায় সাড়ে চার হাজার বইয়ের সংগ্রহ। মহান মুক্তিযুদ্ধের ওপর রচিত সাড়ে তিন হাজার মূল্যবান গ্রন্থ ছাড়াও রয়েছে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নয়শত বইয়ের বিশাল সম্ভার। পরিদর্শনের পাশাপাশি যারা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গবেষণা করেন তারা নিয়মিত আসেন কর্নারটিতে। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন, চিন্তা-চেতনা সম্পর্কে জানতে আগ্রহী শিক্ষার্থীরা এখানে ভিড় জমায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বইয়ের মাঝে মুখ লুকিয়ে থাকেন তারা। নিরিবিলি কর্নার যেনো পরিণত হয় জ্ঞান পিপাসুদের আখড়ায়। অবসর সময়ে সেখানে বসে বই পড়ে কাটাতে পারে শিক্ষার্থীরা। তার জন্য রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মামুন মণ্ডল বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান কম-বেশি সবারই জানা। এগুলো আমরা পাঠ্য বইয়ে পড়েছি। কিন্তু সে জানাতে নিজেকে সীমাবদ্ধ না রেখে আরও বেশি জানতে হবে।

সাড়ে ৪ হাজার বই নিয়ে রাবিতে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’

ফারসি বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিল বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এত বই রচিত হয়েছে এখানে না আসলে সেটি জানতাম না। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশপ্রেম, ব্যক্তিত্ব, প্রজ্ঞা এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে তার ত্যাগ ও অবদান সম্পর্কে আমরা খুব অল্পই জানি। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে বিস্তর জানার সুযোগ করে দিয়েছে এ কর্নারটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।

শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালার কিউরেটর ড. মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় খোলা থাকলে প্রতিদিন প্রায় গড়ে প্রায় ২০০-৩০০ শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থী আসে। এছাড়াও জাতীয় দিবসগুলোতে বেশি মানুষের সমাগম হয়। এছাড়াও ভর্তি পরীক্ষার সময় দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভর্তি পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এখানে আসে ঘুরতে। তারা বঙ্গবন্ধুকে নতুন করে জানতে এখানে ভিড় জমায়। প্রায় তিন বছর আগে বঙ্গবন্ধু কর্নারের যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে এটি একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরি। এখানে সব মিলে প্রায় সাড়ে চার হাজার গ্রন্থ রয়েছে। প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি করা হচ্ছে বইয়ের সংখ্যা।

তিনি আরও বলেন, কেউ যদি বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশকে নিয়ে গবেষণা করতে চায় তার জন্য একটি উত্তম জায়গা হলো এ কর্নার। কারণ এখানে মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে রয়েছে বিশাল বইয়ের সম্ভার। এছাড়াও এখানে রয়েছে ডাক টিকিটের বিশাল সংগ্রহ। ‘ডাকটিকিটে বাংলাদেশ’ ও ‘ডাকটিকিটে বঙ্গবন্ধু’ যা বাংলাদেশে বিরল। বঙ্গবন্ধুর শৈশব থেকে শুরু করে রাজনৈতিক, পারিবারিক সংগ্রামী জীবনের নানা স্থিরচিত্র রয়েছে এখানে।

কিউরেটর আরও বলেন, সাপ্তাহিক ছুটি ও সাধারণ ছুটির দিনগুলো এটি বন্ধ থাকে। তবে বিশেষ দিন যেমন শহীদ দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শোক দিবস অর্থাৎ জাতীয় দিবসগুলোতে খোলা রাখা হয়। নতুন সূচি অনুযায়ী প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ৪টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়।

মনির হোসেন মাহিন/আরএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।