বঙ্গবন্ধুর গ্রাফিতি মুছে বহিষ্কৃত জাবি ছাত্র ইউনিয়নের দুই নেতা
ছাত্র ইউনিয়নের জাবি সংসদের একাংশের সভাপতি অমর্ত্য রায় এবং সাধারণ সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলিকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইনে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষদের দেওয়ালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি মুছে ধর্ষণ-স্বৈরাচারবিরোধী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যঙ্গচিত্র আঁকার অভিযোগে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অমর্ত্য ও ঋদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের সভাপতিত্বে সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসান সাংবাদিকদের বলেন, গ্রাফিতি মুছে ফেলার ঘটনায় তদন্ত কমিটির সুপারিশে অর্মত্য রায় ও ঋদ্ধ অনিন্দ্যকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে এবং বুধবার রাষ্ট্রীয় আইনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
এর আগে, গত ৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ও মানবিকী অনুষদ ভবনের দেওয়ালে বঙ্গবন্ধুর গ্রাফিতি মুছে ধর্ষণ ও স্বৈরাচারবিরোধী চিত্র আঁকেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ১৫ ফ্রেব্রুয়ারি দুপুর থেকে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তিসহ তিন দফা দাবিতে টানা চারদিন অনশনে বসেন ছাত্রলীগের দুই নেতা। পরে উপাচার্যের আশ্বাসে গত রোববার রাতে অনশন ভাঙেন তারা।
এর আগে গ্রাফিতি আঁকার কথা স্বীকার করে অঙ্কনকারী অংশের নেতৃবৃন্দ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনকে সমর্থন জোগাতে এবং নিপীড়কদের হুঁশিয়ারি দিতে নতুন গ্রাফিতি আঁকা হয়েছে। প্রায় তিন বছর পার হওয়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি অস্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এছাড়া পাশের দেওয়ালে শেখ মুজিবুর রহমানের একটি বিশাল, স্পষ্ট ও নান্দনিক চিত্রকর্ম দৃশ্যমান ছিল। তাই চলমান ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনের প্রাসঙ্গিকতার ভিত্তিতে এই গ্রাফিতি আঁকা হয়েছে।
এদিকে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের আরেক অংশ ক্যাম্পাসে গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় নিপীড়নবিরোধী মঞ্চের ব্যানারে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে আন্দোলনে সক্রিয় অবস্থানে আছে। এই অংশের আহ্বায়ক হিসেবে আছেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আলিফ মাহমুদ এবং যুগ্ম আহ্বায়ক জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিব জামান।
সংশ্লিষ্টদের ধারণা, ক্যাম্পাসে ধর্ষণকাণ্ডে ৫ দফা দাবিতে ‘নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের’ ব্যানারে চলমান আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের বহিষ্কৃত ওই দুই নেতা বঙ্গবন্ধুর গ্রাফিতি মুছে নতুন গ্রাফিতি আঁকেন। সেই গ্রাফিতিতে ছাত্র ইউনিয়নের নাম উল্লেখ করে তারা ‘ধর্ষণ ও স্বৈরাচার থেকে আজাদী’ শীর্ষক বাক্য জুড়ে দেন।
অন্যদিকে মঙ্গলবারের ওই সিন্ডিকেট সভায় পাবলিক হেল্থ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও নিপীড়ক শিক্ষক মাহমুদুর জনিকে চাকুরিচ্যুত করা হয়। নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের ৫টি দাবির মধ্যে এটি ছিল অন্যতম একটি দাবি।
মাহবুব সরদার/এফএ/এএসএম