জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

যৌন-নিপীড়নের অমীমাংসিত অভিযোগ নিষ্পত্তিসহ ৫ দাবিতে মানববন্ধন

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৬:১৮ পিএম, ০৩ মার্চ ২০২৪

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ধর্ষণকাণ্ডে জড়িত ও সহায়তাকারীদের শাস্তিরসহ পাঁচ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

রোববার (৩ মার্চ) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে ‘নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের’ ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

অন্য দাবিগুলো হলো, মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে গণরুম বিলুপ্তপূর্বক নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করা এবং র্যাগিং সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা, নিপীড়কদের সহায়তাকারী প্রক্টর ও মীর মোশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষের অপরাধ তদন্ত এবং সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের তদন্ত চলাকালে প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা, মাদকের সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে জড়িতদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণাপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

মানববন্ধনে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামছুল আলম বলেন, আজকে ধর্ষণকাণ্ডের তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। আশা করব দ্রুত প্রতিবেদনে উল্লিখিত বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করবে প্রশাসন। ইতোমধ্যে আমাদের একটি দাবি সফল হয়েছে। আমাদের অন্যান্য দাবিগুলোও দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা একটি নৈতিক অবস্থান থেকে আন্দোলন করছি। ক্যাম্পাসের সর্বস্তরের মানুষের নৈতিক সমর্থন আমাদের সঙ্গে রয়েছে। আমরা এ নৈতিক সমর্থনের শক্তিতে বলিয়ান হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি।

শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি এবং প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, যৌন নিপীড়নের দায়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনিকে চাকরিচ্যুত করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট। এ সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু আমার কাছে উপাচার্যের নৈতিক মূল্যবোধ নিয়ে অনেকগুলো প্রশ্ন জেগেছে। যে তদন্তে জনিকে বরখাস্ত করা হয়েছে ওই তদন্তে মূল অভিযোগকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনছাত্রীকে দায়মুক্তি আদায়ে বাধ্য করেছিল, চাপ প্রয়োগ করেছিল, প্রলোভন দেখিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর। তদন্ত রিপোর্টে সে বিষয়গুলো এসেছে কি না আমাদের জানা নেই। এ ধরনের গর্হিত অপরাধে কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাই জানেন। প্রক্টর কোনোভাবেই এ অপরাধের দায় এড়াতে পারে না।

দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, একজন শিক্ষার্থী তার মেধার পরিচয় দিয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এখানে পড়াশোনা করতে আসেন। আমরা যদি মাদক ব্যবস্থার মূলোৎপাটন করতে না পারি তাহলে একের পর এক মেধাবী শিক্ষক বা শিক্ষার্থী ধর্ষক বা নিপীড়ক হয়ে ক্যাম্পাস থেকে বিদায় নেবে।

মানববন্ধনে সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিব জামানের সঞ্চালনায় এসময় ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী, ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার, দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহমুদা আকন্দ, নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের সদস্য সচিব মাহফুজ ইসলাম মেঘ, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আলিফ মাহমুদ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিয়া, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান লাবিব প্রমুখ।

মাহবুব সরদার/আরএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।