জবিতে বৈশাখ রাঙাতে চারুকলার শিক্ষার্থীদের শৈল্পিক কাজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:২০ পিএম, ০৮ এপ্রিল ২০২৪

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) প্রতিবছর পহেলা বৈশাখে রঙিন মাত্রা যুক্ত করে চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের শৈল্পিক কাজ। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস জুড়ে শিক্ষার্থীদের নান্দনিক পেইন্টিং ও নানারকম শিল্পকর্ম তৈরিসহ উদ্ভাবনী বিভিন্ন কাজ-কর্মে ভিন্ন আমেজ সৃষ্টি হয় বৈশাখকে ঘিরে।

তবে এক্ষেত্রে এখনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থায়ন দেওয়া সম্ভব হয়না। যার ফলে সার্বিক আয়োজনে বেশ কিছুটা বেগ পেতে হয় শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টদের। অর্থের পরিমাণ বাড়ালে আরও সুন্দর কাজ উপহার দিতে পারবেন বলে দাবি শিক্ষার্থীদের।

জানা গেছে, পহেলা বৈশাখের কয়েকদিন আগে থেকেই শুরু হয় চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের বর্ণিল কর্মযজ্ঞ। বর্ষবরণের মূল আয়োজন থাকে চারুকলা অনুষদকে ঘিরেই। তাই সবার প্রথমে শুরু হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেয়াল চিত্র অঙ্কন। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের জীর্ণশীর্ণ দেয়ালও হয়ে উঠে রঙিন।

বিগত বছরের মত এবারও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম গেইট ও দ্বিতীয় গেইট জুড়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে রিকশা চিত্র এবং ফুল, মাছ, বাঘ,ময়ূর, নৌকা,বিল্ডিং সহ নানা চিত্র। যাতে আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠেছে গেইটগুলো। গত ২৬ মার্চ থেকে শুরু করে চিত্রকর্ম অঙ্কনের কাজ ২ এপ্রিল শেষ করেন শিক্ষার্থীরা।

এবছর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন একাডেমিক ভবনের নিচতলায় শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বড় আকৃতির কৃত্রিম রিক্সাটি রঙ তুলিতে ফুটিয়ে তুলেছেন। পাশাপাশি বর্ষবরণ উপলক্ষে একটি কুমিরের অবয়ব তৈরি করেছেন তারা।

প্রতিবছর বৈশাখকে ঘিরে স্বল্প সময়েই অসংখ্য মুখোশ,ফ্যাস্টুন,মৌমাছি,পায়রা, প্যাঁচাসহ বিভিন্ন প্রাণীর অবয়ব ও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র তৈরি করেন অনুষদটির শিক্ষার্থীরা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী এক চমৎকার মেলবন্ধন তৈরি হয়। চারুকলা অনুষদের শিক্ষকরা এক্ষেত্রে প্রত্যক্ষভাবে গাইডলাইন দিয়ে থাকেন শিক্ষার্থীদের।

এবার চারুকলা বিভাগের পঞ্চম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বৈশাখকে রাঙিয়ে তোলার জন্য সার্বিক আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছেন।বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে চারুকলার শিক্ষার্থীরা কাজ করছেন। নতুন একাডেমিক ভবনের নিচতলায় দুইটি স্ট্রাকচার তৈরিতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন তারা।

চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী রুবেল সরকার বলেন, নিয়মানুযায়ী বিভাগের ৫ম ব্যাচ হিসেবে এবার আমাদের উপর বৈশাখের মূল দায়িত্ব এসেছে। দুইটি স্ট্রাকচারের পাশাপাশি দেয়ালচিত্র এবং মুখোশ-ফ্যাস্টুনের কাজ শেষ হয়েছে। এত অল্প সময়ে সব কাজ শেষ করা আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। তাও অনুষদের শিক্ষক ও সিনিয়র-জুনিয়র সবার সম্মিলিত অংশগ্রহণের ফলস্বরূপ আমরা মহা সমারোহে বৈশাখ উদযাপন করতে পারবো।

জবির চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহা. আলপ্তগীন তুষার বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ধারাবাহিকভাবেই পহেলা বৈশাখ উদযাপন হয়ে আসছে। এই আয়োজন আমাদের ঐতিহ্য ও শৈল্পিক সত্ত্বাকে পুনরুজ্জীবিত করে। চারুকলার শিক্ষার্থীরা বরাবরই নিজ প্রচেষ্টা ও শৈল্পিক গুণে বৈশাখের জন্য কাজ করে থাকেন। এটি অনুষদের জন্য গর্বের বিষয়। তবে এই বিশাল আয়োজন ও পরিশ্রমের বিপরীতে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে অর্থ পাই সেটা অপ্রতুল। অর্থের পরিমাণ বাড়ালে সুন্দরভাবে সার্বিক আয়োজন করা সম্ভব।

আরএএস/এসআইটি/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।