চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

‘নেতার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ থাকায়’ ছাত্রলীগ কর্মীকে মারধর

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৪:১৮ পিএম, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
নিজ গ্রুপের কর্মীদের হাতে মারধরে আহত জয়

গ্রুপ নেতার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো না থাকার অভিযোগ তুলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগের এক কর্মীকে নির্মমভাবে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। তবে অভিযুক্তদের ভাষ্য, মাদক সেবনে বাধা দিতে গেলে তার সঙ্গে হাতাহাতি হয়।

সোমবার (২২ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে এএফ রহমান হলের ৪৪০ নম্বর রুমে এ ঘটনা ঘটে।

চবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াসের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো না—এমন অভিযোগ তুলে মারধর করা হয় আশিকুজ্জামান জয় নামের ওই ছাত্রলীগ কর্মীকে।

ভুক্তভোগী আশিকুজ্জামান জয় চবির পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের ছাত্র। মারধরকারীরা হলেন লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল জোবায়ের, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মামুন মিয়া, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের ফয়সাল মিয়া (আতিশ ফয়সাল), ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তনয় কান্তি সরকার, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শাকিল আহমেদ এবং উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের রাসেল রাজসহ ১৫২০ জন। তারা সবাই ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।

আশিকুজ্জামান জয় জাগো নিউজকে বলেন, ‘ইলিয়াস ভাইয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক কেন খারাপ’ এমন প্রশ্ন তুলে অভিযুক্তরাসহ ১৫-২০ জন মিলে আমাকে মারধর করেন। তারা আমার রুমে এসে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেন। লাঠি, রড, হকস্টিক দিয়ে মারধর করেন। একপর্যায়ে হলের ছাদ থেকে ফেলে দিতে গেলে আমি কোনোমতে দৌড়ে পালিয়ে যাই। পরে মেডিকেল নিতে গেলে হলের গেটে আরেক দফা মারধর করা হয়। হলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে সেটার প্রমাণ মিলবে। পরে আমি হলের দুজন সিনিয়রের সহযোগিতা নিয়ে মেডিকেলে গিয়ে চিকিৎসা নিই। জানি না কবে সুস্থ হবো।

অভিযুক্ত আব্দুল্লাহ আল জোবায়ের জাগো নিউজকে বলেন, ‘সে (জয়) আমাদের সেশনেরই ছেলে। সে হলে প্রকাশ্যে মাদক গ্রহণ ও ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। হলের ভেতরে কেউ মাদক সেবন করলে এবং মাদক বিক্রি করলে আমরা অবশ্যই তা প্রতিহত করবো। তাকে মাদক গ্রহণে বাধা দিলে সে উগ্র আচরণ করে। সেখান থেকে হাতাহাতি হয়েছে। কিন্তু হত্যাচেষ্টার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।’

অভিযুক্ত তনয় কান্তি সরকার বলেন, ‘আশিক নেশা করে। এ বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলতে গেলে সে সবার সঙ্গে তর্ক করায় ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে হালকা মারধর করা হয়েছে। আমি যতটুকু সম্ভব তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলাম।’ অভিযুক্ত অন্যরাও একই কথা বলেন।

মারধরের ঘটনার পর আশিকুজ্জামান জয়ের মাদক সংশ্লিষ্টতার কয়েকটি ছবি আসে জাগো নিউজের হাতে। সেখানে তাকে হাতে মদের বোতলসহ দেখা যায়। তবে ছবিগুলো হলের মাদক কারবারি অন্য এক বন্ধুর কক্ষে তোলা এবং নিজেকে কোনো প্রকার মাদকের সঙ্গে জড়িত নয় বলে দাবি করেন জয়।

এ বিষয়ে জানতে বিজয় গ্রুপের একাংশের নেতা মোহাম্মদ ইলিয়াসের সঙ্গে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি সাড়া দেননি।

প্রক্টর ড. অহিদুল আলম জাগো নিউজকে বলেন, খবর পেয়েই আমি হলে গেছি। তবে সে কটেজে চলে যাওয়ায় তার সঙ্গে দেখা হয়নি। পরে ফোনে কথা হয়েছে। তাকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলে হয়েছে। অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, কেউ মাদকের সঙ্গে জড়িত হলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার তো কারো নেই।

আহমেদ জুনাইদ/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।