রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

সনাতন ধর্মাবলম্বী ছাত্রকে ‘শিবির’ আখ্যা দিয়ে হত্যার হুমকির অভিযোগ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৫:০৫ পিএম, ১৭ মে ২০২৪
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা আতিকুর রহমান

মধ্যরাতে হলের ছাদে নিয়ে বেধড়ক মারধর ও শিবির অ্যাখ্যা দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বী এক শিক্ষার্থীকে হত্যার হুমকির অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) হল শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। নিরাপত্তা চেয়ে হল প্রশাসন ও প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম সবুজ বিশ্বাস। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের প্রথমবর্ষের ছাত্র। তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের ৩১৬ নম্বর কক্ষে দলীয় প্রভাবে অবস্থান করছিলেন। সবুজ হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদের অনুসারী বলে জানা গেছে।

অভিযুক্ত আতিকুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৬-১৭ সেশনের ছাত্র। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের সহ-সভাপতি। আতিকুর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী বলে জানা গেছে।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দিনগত রাত ২টার দিকে সোহরাওয়ার্দী হলের সহ-সভাপতি আতিকুর রহমানসহ তার ৮-১০ জন অনুসারী সবুজ বিশ্বাসকে রুম থেকে হলের ছাদে নিয়ে যান। সেখানে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। একপর্যায়ে ‘শিবির’ আখ্যা দিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয় তাকে। সবুজ বিশ্বাস নিজে সনাতন ধর্মাবলম্বী বলে জানালে আরও বেশি মারধর করা হয়। একপর্যায়ে জীবন রক্ষার্থে দৌড়ে ছাদ ত্যাগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

সনাতন ধর্মাবলম্বী ছাত্রকে ‘শিবির’ আখ্যা দিয়ে হত্যার হুমকির অভিযোগ

অভিযোগ থেকে আরও জানা যায়, আতিকুর রহমান ও তার অনুসারীরা ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর কক্ষ থেকে পানির ফিল্টার, ক্রিকেট খেলার ব্যাট, হেডফোনসহ আরও বেশকিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যান বলেও উল্লেখ করা হয় অভিযোগপত্রে।

তবে সবুজ নামের কোনো শিক্ষার্থীকে চেনেন না দাবি করে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা আতিকুর রহমান বলেন, ‘আমার রুমে কিছুদিন আগে লুটপাট চালায় হলের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদের অনুসারীরা। এ বিষয়ে আমি হল প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে মিথ্যার নাটক সাজিয়েছে তারা। আমি এ বিষয়ে আইনের আশ্রয় নেবো। প্রয়োজনে থানায় মামলা করবো।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, লিখিত অভিযোগ পুরোপুরি সত্যি নয়। সবুজ ওই হলের আবাসিক কোনো শিক্ষার্থী নয়। আবাসিকতা ছাড়া হলে থাকার কোনো প্রশ্নই আসে না। দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করে দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘সবুজ এই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী না। এতদিন সে দলীয় পরিচয়ে এ হলে অবস্থা করছিল। তবে তাকে শিবির বলে মারধরের একটি লিখিত অভিযোগ আমাদের কাছে দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা তদন্ত করে দেখবো। সত্যতা যাচাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

মনির হোসেন মাহিন/এসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।