ফাতেহা পাঠ ও গান-কবিতায় বিদ্রোহী কবিকে স্মরণ

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ফাতেহা পাঠ, গান-কবিতা ও আলোচনার সভার মাধ্যমে প্রেম-ভালোবাসা ও দ্রোহের কবিকে স্মরণ করেছেন সর্বস্তরের মানুষ।

শনিবার (২৫ মে) সকাল সোয়া ৬টা থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে বিভিন্ন শিক্ষা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন। শুরুতেই সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, কবি নজরুল ইনস্টিটিউট, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, বাংলা একাডেমি ও জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

এরপর সকাল সাড়ে ৬টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে একটি শোভাযাত্রা নিয়ে কবির সমাধি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শিক্ষক ও কর্মচারীরা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেদ্রীয় মসজিদের খতিব ড. এমাদউদ্দিন ফাতেহা পাঠ করেন এবং কবির আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করেন। এরপর একে একে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল, ইনস্টিটিউট ও বিভাগ শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

সকাল পৌনে ৭টায় কবির সমাধির পাশে নজরুলের বিখ্যাত ‘আমরা একি বৃন্তে দুটি ফুল’ গানের মাধ্যমে শুরু হয় আলোচনা সভা পর্ব। আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন কবির পরিবারের সদস্যরা, উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভুঁইয়া প্রমুখ। আলোচনা সভায় বক্তারা কবির জীবনের নানাদিক নিয়ে আলোচনা করেন।

সকাল ৭টার দিকে বিএনপি পক্ষ থেকে দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে শ্রদ্ধা জানান দলের নেতাকর্মীরা। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস ও নাহিদুজ্জামান শিপনের নেতৃত্বে ঢাবি ছাত্রদল শ্রদ্ধা জানায়।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রতিবাদের ভাষায় নজরুল আমাদের যে শৈল্পিক নৈপুণ্য দেখিয়েছেন, সেই প্রতিবাদের ভাষা রপ্ত করেই আমরা আজও গণতন্ত্র ফেরানো, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার লড়াই অব্যাহত রেখেছি। আমরা যখন কারাগারে যাই তখন নজরুলকে স্মরণ করি। আমাদের যখন বিচার হয় তখন নজরুলকে স্মরণ করি।

এরপর সকাল সাড়ে ৭টার দিকে প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ সময় দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দীন নাছিমসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এরপর ক্রমান্বয়ে শ্রদ্ধা জানান আওয়ামী লীগের অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

শ্রদ্ধা জানানো শেষে ওবায়দুল কাদের বলেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনার কবি, বিদ্রোহী কবি, যৌবনের কবি কাজী নজরুল ইসলাম। কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের সংকটে, সংগ্রামে, মুক্তিযুদ্ধে অফুরান এক প্রেরণার উৎস।

বেলা বাড়তে থাকলে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের পাশাপাশি ব্যক্তি পর্যায়ে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ বিদ্রোহী কবির আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।

এমএইচএ/এমএএইচ/এমএস