রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে বিব্রত, পদত্যাগের হুঁশিয়ারি প্রাধ্যক্ষদের

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৫:৪৫ পিএম, ২৯ মে ২০২৪
ফাইল ছবি

ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা না নিলে পদত্যাগের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল প্রাধ্যক্ষরা।

মঙ্গলবার (২৮ মে) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবনের উপাচার্যের কার্যালয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে হল প্রাধ্যক্ষদের এক জরুরি সভায় এ হুঁশিয়ারি দেন তারা। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. আসাবুক হকও উপস্তি ছিলেন।

জানা যায়, সোমবার (২৭ মে) দুপুরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নবাব আবদুল লতিফ হলের গেট ও প্রাধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে ডাইনিং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িতদের বহিষ্কারের জন্য সুপারিশ করেছে প্রাধ্যক্ষ পরিষদ। জড়িতদের বিরুদ্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়া হলে একযোগে পদত্যাগের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন একাধিক হল প্রাধ্যক্ষ।

বহিষ্কারের সুপারিশপ্রাপ্তরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান হোসেন, হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তাসকিফ আল তৌহিদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদুর রহমান।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে ১৬টি আবাসিক হলের প্রাধ্যক্ষরা জরুরি সভায় বসেন। সেখানে শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেছেন তারা। সভায় ছাত্রলীগের বাধার কারণে ঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন হলের প্রাধ্যক্ষরা।

তারা অভিযোগ করেন, অনেক সময় প্রাধ্যক্ষরা হেনস্তারও শিকার হচ্ছেন। দুই প্রাধ্যক্ষকে লাল কালিতে ক্রস দাগসংবলিত ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নিলে একসঙ্গে পদত্যাগ করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রাধ্যক্ষরা।

পদত্যাগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ছাত্রলীগের বর্তমান কর্মকাণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সবাই বিব্রত। আমরা হল প্রাধ্যক্ষরা এসব কর্মকাণ্ডের সঠিক পদক্ষেপ দেখতে চাই। আর যদি তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন না করে তবে আমরা প্রাধ্যক্ষরা কঠিন সিদ্ধান্ত নেব। এমনকি সকলে পদত্যাগের সিদ্ধান্তও নেওয়া হতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নবাব আব্দুল লতিফ হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ.এইচ.এম. মাহবুবুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এমন কর্মকাণ্ডের যথাযথ ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আমরা সকল প্রাধ্যক্ষরা পদত্যাগ করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা আমাদের সিদ্ধান্তে অটল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. আসাবুক হক বলেন, প্রাধ্যক্ষ স্যারদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। তাদের সব অভিযোগ আমরা শুনেছি। নবাব আব্দুল লতিফ হলের ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন তিন দিনের মধ্যে জমা দেওয়ার কথা। প্রতিবেদন হাতে পেলে সে অনুযায়ী আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেবো।

সোমবার দুপুরে নবাব আব্দুল লতিফ হলের ডাইনিংয়ে খেতে যান মনির হোসেন নামের ছাত্রলীগের এক কর্মী। খাবারের মধ্যে তিনি সিগারেটের একটা অংশ দেখতে পান। পরে ডাইনিং কর্মচারীদের সঙ্গে উচ্চবাচ্য করেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে উপস্থিত আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী মিলে ডাইনিং ভাঙচুর করেন এবং গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে হলের প্রাধ্যক্ষ রুমে তালা দেওয়া, নেমপ্লেট ভাঙচুরসহ প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে গেটে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করেন তারা। প্রাধ্যক্ষকে লাল কালির ক্রস দাগসংবলিত ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করে পদত্যাগের দাবি জানান তারা।

তবে হল প্রাধ্যক্ষের দাবি, হলের ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তাসকিফ আল তৌহিদ ছাত্রলীগের ২০ নেতাকর্মীর একটি তালিকা দিয়ে হল প্রশাসনের কাছে জার্সি দাবি করেন। তিনি তাতে সাড়া না দেওয়ায় উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এসব করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

মনির হোসেন মাহিন/এনআইবি/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।