চাঁদপুরে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জেলে শূন্য মেঘনার অভয়াশ্রম

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চাঁদপুর
প্রকাশিত: ০৭:৪১ পিএম, ২৬ মার্চ ২০২৫

ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় জাটকাসহ সব ধরনের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। নিষিদ্ধ সময়ে জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে টাস্কফোর্স দিন ও রাতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। বিশেষ করে মৎস্য বিভাগের ১০টি স্পিডবোট নদী সংলগ্ন খালে অবস্থান নিয়েছে। যার ফলে বিগত বছরের তুলনায় এ বছর অনেকটা জেলে শূন্য অভয়াশ্রম এলাকা। দুই মাসের অভিযান সফল হলে ধারাবাহিক ইলিশ উৎপাদন বাড়ার সম্ভাবনা জানিয়েছে মৎস্য বিভাগ।

জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার অভয়াশ্রম এলাকায় রয়েছে প্রায় ৪৩ হাজার জেলে। আর এসব জেলেরা মৎস্য আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করে। সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে অনেক জেলে এখন বেকার হয়ে পড়েছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যেক জেলেকে ৪ মাসের জন্য ১৬০ কেজি চাল খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

বুধবার (২৬ মার্চ) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মেঘনা উপকূলীয় সদর উপজেলার আনন্দ বাজার, টিলাবাড়ি ও পুরাণ বাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে নদী অনেকটা জেলে শূন্য। এর কারণ হিসেবে জানাগেল সদর ও হাইমচর উপজেলার নদী সংযুক্ত খালে মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে স্পিডবোট অবস্থান করে। দিন ও রাতে এ দুই উপজেলায় ১০টি স্পিড দিয়ে মৎস্য কর্মকর্তারা নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছেন।

সদরের আনন্দ বাজার এলাকার জেলে মানিক খান, হযরত আলী বকাউল, বিল্লার দর্জি ও ইদ্রিস আলী প্রধানীয়া বলেন, জাটকা রক্ষায় এখন আমরাই মৎস্য বিভাগ ও প্রশাসনকে সহযোগিতা করি। আমরা জাটকা ধরা থেকে বিরত আছি এবং কেউ আমাদের এলাকায় জাটকা ধরতে এলে প্রশাসনকে তাৎক্ষনিক জানাই।

ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় জাটকাসহ সব ধরনের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার

তারা আরও বলেন, বিগত বছরের তুলনায় এ বছর মৎস্য বিভাগ, নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ডের অভিযান কঠোর হওয়ায় জাটকা ধরতে নামছে না জেলেরা। কারণ শুধু নিষিদ্ধ কারেন্ট জালই নয়, যে কোনো জাল নদীতে ফেলা হলে প্রশাসন নিয়ে যাচ্ছে।

চাঁদপুর সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মির্জা ওমর ফারুক বলেন, অভয়াশ্রমের ইতোমধ্যে অর্ধেক সময় অতিবাহিত হচ্ছে। এ সময়ে আমরা দিন ও রাতে নদীতে অবস্থান করছি। বিভিন্ন খালের মুখে আমাদের অবস্থান থাকায় জেলেরা নামতে পারছে না। যার ফলে ২৪ ঘণ্টাই আমরা নদী জাল ও জেলে শূন্য রেখেছি।

ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোল্লা এমদাদুল্যাহ বলেন, জাটকা রক্ষার জন্য দেশের পাঁচটি অভয়াশ্রমের মধ্যে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা অন্যতম। কারণ হচ্ছে সবগুলো অভয়াশ্রমের যে পরিমাণ জাটকা এরমধ্যে অর্ধেকই হচ্ছে চাঁদপুরে। সদর ও হাইমচর মেঘনায় এসব জাটকার বিচরণ বেশি থাকে। যে কারণে মৎস্য বিভাগ এ বছর ১০টি স্পিডবোট দিয়ে অভিযান পরিচালনা করছে। যাতে করে কোনো জেলে জাল ও নৌকা নিয়ে নামতে না পারে। মৎস্য বিভাগ ২৪ ঘণ্টা নদী পাহারায় রয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এ কঠোর অবস্থান ও জাটকা রক্ষা করার ফলে ইলিশের উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাবে।

শরীফুল ইসলাম/আরএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।