ঈদের ছুটিতে পর্যটক বেড়েছে মহামায়ায়

ঈদের ছুটিতে চট্টগ্রামের মহামায়া লেকে পর্যটকদের সমাগম ও দর্শনার্থীর ভিড় বেড়েছে। পার্কের পাহাড়, লেক, ঝরনা ও সুড়ঙ্গপথ দেখতে সকাল থেকে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম এই লেক।
শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষ বিনোদন পেতে ছুটছেন মহামায়ায়। পর্যটকদের আনাগোনায় অনেকটা আগের চিরচেনা রূপে ফিরেছে এই পর্যটন স্পটটি।
ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের এমন ভিড় সপ্তাহজুড়ে থাকবে বলে ধারণা করছেন পার্কের ব্যবসায়ী ও বোট চালকরা। তারা বলছেন, প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্য কাছে ডাকে পর্যটকদের। প্রতি বছর ঈদের ছুটিতে প্রকৃতির এই সৌন্দর্য দেখতে হাজারো পর্যটক ছুটে আসেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মহামায়ার যাওয়ার সড়কে গাড়ির জটলা। ভাড়া ও ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে সবাই মহামায়া ছুটে যাচ্ছেন। টিকিট কেটে ভেতরে প্রবেশ করে মূল বাঁধে গিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন অনেকে। কেউ কেউ ছবি তুলছেন, কেউ নৌকায় করে লেকে ঘুরছেন। আবার কেউ কেউ কায়াকিং করছেন।
এদিকে ঈদের দিনে মহামায়া বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্কে পর্যটকের আগমন ছিল চোখে পড়ার মতো। এখানে পর্যটকদের জন্য রয়েছে উন্নত মানের হোটেল, থাকার জন্য রয়েছে থ্রি স্টার মানের মহামায়া রিসোর্ট।
চট্টগ্রাম শহর থেকে ঘুরতে আসা চর বন্ধুর একজন মনিরুল ইসলাম বলেন, মহামায়া আমাদের খুব পছন্দের জায়গা। বছরে কয়েকবার এখানে বেড়াতে আসি। এবার ঈদেও সব বন্ধু মিলে চলে এসেছি।
প্রাকৃতিম নৈসর্গে ঘেরা ১১ বর্গকিলোমিটার আয়তনের মহামায়া লেক। যা আয়তনের দিক দিয়ে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর। এই পার্কে লেকের স্বচ্ছ জল ছাড়াও রয়েছে পাহাড়ের মাঝে গুহা, ঝরনা ও সুড়ঙ্গপথ। এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন ও শুষ্ক মৌসুমে কৃষি খাতে সেচ সুবিধার লক্ষ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড মহামায়া সেচ প্রকল্প চালু করে। এর অংশ হিসেবে ১৯৯৯ সালে মহামায়া খালের ওপর স্লুইস গেট স্থাপন করে। এভাবেই সৃষ্টি হয় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম মহামায়া লেক।
ঈদুল আযহার ছুটিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থী এখানে ভ্রমণে আসছেন। তবে পার্কের ভেতরে লেকের পানিতে কচুরিপানা ও ময়লা দেখে পর্যটকরা কিছুটা হতাশ হচ্ছেন।
মহামায়া বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্কের ইজারাদার মোহাম্মদ শরিফ উদ্দিন বলেন, মহামায়া খুবই সুন্দর একটি পর্যটন কেন্দ্র। এখানে একই স্থানে রয়েছে লেক, পাহাড়, ঝরনা ও রাবার ড্যাম। পাহাড়ের কোলে লেকটির আঁকাবাঁকা অবয়ব অপরূপ সুন্দর। ছোট বড় অসংখ্য পাহাড়ের মাঝে অবস্থিত এই লেক। লেকের অন্যতম আকর্ষণ পাহাড়ি ঝরনা ও স্বচ্ছ পানি। মহামায়া লেকের নীল জলরশিতে কায়াকিং করতে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসেন অনেকে।
তিনি আরও বলেন, পর্যটকদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে এখানে। খাওয়া ও থাকার জন্য রয়েছে উন্নত মানের রেস্টুরেন্ট ও রিসোর্ট। নিরাপত্তার ব্যবস্থায় পুরো পার্ক সিসি ক্যামেরার আওতায় রয়েছে।
এম মাঈন উদ্দান/এমএন/এমএস