শীতে নাকাল জয়পুরহাটের জনজীবন

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি জয়পুরহাট
প্রকাশিত: ১২:০৬ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯

টানা শৈত্যপ্রবাহে নাকাল হয়ে পড়েছে জয়পুরহাটের জনজীবন। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে ঘর থেকে কেউ বেরই হচ্ছেন না। সবচয়ে বেশি বেকায়দায় পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। একদিন কাজ না করলে দু’মুঠো অন্ন জোটে না এমন মানুষরা শীতের প্রকোপে কাবু হয়ে পড়েছেন। এদিকে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের ভিড় বেড়েছে হাসপাতালে।

গত বৃহস্পতিবার থেকে জয়পুরহাটে শীত জেঁকে বসেছে। এ কয়দিনে জেলার কোথাও সূর্যের দেখা মেলেনি। সোমবার সকাল থেকেও পুরো আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। সেই সঙ্গে কনকনে বাতাস শীতের তীব্রতা আরও বাড়িয়েছে। ছিন্নমূল মানুষরা সকাল-সন্ধ্যা খড়-কুটো দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। শহরেও মানুষের আনাগোনা কম।

তবে গরম কাপড় কিনতে ভিড় বেড়েছে শহরের বিভিন্ন হকার্স মার্কেটের দোকানগুলোতে। স্বল্প দামে শীতের কাপড় মেলায় নিম্ন আয়ের মানুষরা দোকানগুলোতে ভিড় করছেন।

Joypurhat-(2)

সদর উপজেলার ঘোনা পাড়ার কৃষক আক্কাস আলী জানান, ‘শীতে হাত-পা ঠান্ডা হওয়ার পরও থেমে নেই তাদের কৃষি কাজ। শীতের তীব্রতা উপেক্ষা করে সকাল থেকেই মাঠে আলু ক্ষেতের পরিচর্যা করছেন তারা।

শহরের পাচুর মোড়ের পান দোকান রাসেল হোসেন বলেন, সকাল বেলা ঠান্ডার কারণে দোকানেই আসতে পারি না। আবার সন্ধ্যার পর প্রচণ্ড ঠান্ডায় দোকানে বসে থাকাও যায় না। আমরা গরিব মানুষ। অভাবের তাড়নায় দোকোনে ছুটে আসলেও বিকেল হতে না হতে কাস্টমার শূন্য হয়ে যায়। এদিকে আবার এনজিওর কিস্তি আছে। কী করব কিছুই ভেবে পাচ্ছি না।

শাপলা নগর এলাকার হামিদা বেগম বলেন, এই শীতে আর জীবন বাঁচে না। এখন পর্যন্ত কারো কোনো সহায়তা পাই নাই। এই এলাকার সাহেরা বেগম ও সালেহা বেওয়া জানান, গরম কাপড় কেনার সাধ্য তাদের নেই।

শহরের রেলস্টেশন এলাকার ফাতেমা বেওয়া বলেন, আমরা গরিব মানুষ। গরম কাপড় কেনার সাধ্য নাই। সরকারও আমাদের দিকে দেখে না। আপনারা যদি পারেন আমাদের একটা করে গরম কম্বল দেন।

Joypurhat-(2)

সোমবার ভোরে জয়পুরহাটে সর্বনিম্ন ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বলে আবহাওয়া অফিসের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাকির হোসেন।

তিনি বলেন, গত পাঁচদিন ধরে সূর্যের দেখা মেলেনি। তাপমাত্রাও ওঠা-নামা করছে। দিনভর কনকনে ঠান্ডার পর বিকেলেই কুয়াশা কমে না। আর সন্ধ্যার পর তো কথাই নেই। জেলায় শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বলসহ ৩০ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। এখনও অনেক মজুত আছে। আশা করছি, কোনো সমস্যা হবে না।

রাশেদুজ্জামান/এমবিআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।