করোনায় দ্বিগুণ বন্দি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রাজশাহী কারা কর্তৃপক্ষ
বর্তমানে দ্বিগুণের বেশি বন্দি রয়েছেন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে। চলমান করোনা পরিস্থিতিতে বন্ধ রয়েছে জামিন। উল্টো প্রতিদিনই আসছেন নতুন বন্দি। সুরক্ষিত থাকলেও কারাগারে বজায় থাকছে না দূরত্ব। এতে প্রাণঘাতী করোনা ঝুঁকি বাড়ছে।
বিষয়টি ভাবনায় ফেলেছে কারা কর্তৃপক্ষকে। বাড়তি সতর্কতা হিসেবে নতুন বন্দি এলেই কারাফটকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর নেয়া হচ্ছে ভেতরে।
কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দির ধারণক্ষমতা এক হাজার ৪৫০ জন। তবে বৃহস্পতিবার হাজতি এবং কয়েদি মিলে বন্দির সংখ্যা প্রায় তিন হাজার ৪০০ জন।
যদিও মার্চের শুরুর দিকে বন্দি সংখ্যা একটু কম ছিল। এখন আদালতে জামিন শুনানি বন্ধ। কিন্তু প্রতিদিনই আসামি গ্রেফতার এবং কারাগারে আসায় বাড়ছে বন্দির সংখ্যা।
রাজশাহী নগর পুলিশের আদালত পরিদর্শক আবুল হাশেম বলেন, আদালতে বিচারক আছেন। ছোট-খাটো যেসব মামলার জামিন গ্রেফতারের পরই সম্ভব তাদের জামিন দিচ্ছেন। কিন্তু বড় মামলার আসামিদের কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। এদের জামিনের আবেদন করতে পারছেন না আইনজীবীরা।
তিনি বলেন, পুরোনো যেসব বন্দি কারাগারে আছেন তাদেরও জামিন শুনানি হচ্ছে না। ফলে কারাগারে বন্দি সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই বাড়ছে।
এ বিষয়ে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার গিয়াস উদ্দিন বলেন, আদালতে জামিন শুনানি বন্ধ হওয়ার আগে ৪০০ বন্দি জামিন পেয়েছেন। প্রতিদিন কোনো না কোনো কয়েদির সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ায় মুক্তি পাচ্ছেন। এর বিপরীতে এখন আসামি আসছেন কম। ফলে কারাগারে আগে যে রকম বন্দি থাকতেন এখন সংখ্যাটা মোটামুটি সেরকমই।
তবে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণের বেশি বন্দি থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন জেল সুপার। আর এ কারণে কারাগারে বন্দিদের মাঝে শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করার কোনো উপায় নেই বলেও জানান তিনি।
জেল সুপার বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে বন্দিদের নিয়ে ভয়ের ব্যাপার তো আছেই। তবে আমরা সতর্ক আছি। বন্দিদের সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখছি। সময়মতো গোসল, হাতধোয়া এগুলো নিশ্চিত করছি।
তিনি বলেন, কারাগারে প্রতিদিন নতুন যেসব বন্দি আসছেন তাদের ১৪ দিন আলাদা করে রাখা হচ্ছে। আর কারাফটকেই চিকিৎসক তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন। অসুস্থ কেউ থাকলে পুরোপুরি আলাদাভাবে রাখা হচ্ছে। এজন্য তিনটি ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এএম/এমকেএইচ