এসএমএস বা ফোন করলেই মধ্যবিত্তের বাড়িতে খাদ্য সহায়তা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি পঞ্চগড়
প্রকাশিত: ০৯:০১ পিএম, ১০ এপ্রিল ২০২০

পঞ্চগড়ে বৈশ্বিক মহামারি করোনার বিস্তার ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাড়ি বাড়ি খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছে জেলা প্রশাসন। এখন আর ঘটা করে ভিড়ের মধ্যে দৃশ্যমান ত্রাণ তৎপরতা নেই।

মধ্যবিত্তদের খাদ্য সহায়তায় পাঁচ উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের ফোন নম্বর সামাজিক গণমাধ্যমে প্রকাশ করেছেন জেলা প্রশাসক। অভাব থাকা সত্যেও সামাজিক কারণে ত্রাণ নিতে আসতে পারেন না। এমন মধ্যবিত্তরা সেই নম্বরে যোগাযোগ করছেন। ফোন পেয়ে তাদের বাসায় খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছে জেলা প্রশাসন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে গত দুই দিনে দুই উপজেলার ৩০৬টি মধ্যবিত্ত পরিবারের কাছে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়া হয়।

জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, করোনার কারণে পঞ্চগড়ের পাঁচ উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন। পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের সদস্যদের মাঝেও খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে।

গত ৯ এপ্রিল পর্যন্ত জেলার পাঁচ উপজেলা ও তিন পৌরসভায় সরকারিভাবে ৩৪ হাজার ৩৪৫ কর্মহীন, শ্রমজীবী ও অসহায় পরিবারকে ৩৪৪ টন চাল এবং ২৬ হাজার ৪৫৫ পরিবারকে ১৩ লাখ ৩৫ হাজার ৮০০ টাকা নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ঘরে থাকা মানুষদের মাঝে জেলা প্রশাসনের এ খাদ্য সহায়তা বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।

এছাড়া পঞ্চগড়-২ আসনের সংসদ সদস্য ও রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন, পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. মজাহারুল হক প্রধান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত সম্রাট, পৌরসভা মেয়র মো. তৌহিদুল ইসলাম, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান কাজী আল তারিক এবং বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক, স্চ্ছোসেবী সংগঠনের উদ্যোগে দুঃস্থ ও কর্মহীন মানুষদের খাদ্য সহায়তা প্রদান অব্যাহত রেখেছেন।

অন্যদিকে সপ্তাহে ৩ দিন জেলা শহরের ৮ জন ডিলারের মাধ্যমে ১০ টাকা কেজি দরে প্রতিদিন ছয় টন চাল বিক্রয় করা হচ্ছে। পাঁচ উপজেলায় ৯২ জন ডিলারের মাধ্যমে ৫০ হাজার ৪৬৬ জন কার্ডধারী হতদরিদ্রকে ১০ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি চাল বিতরণ শুরু হয়েছে। এরা আগামী আরও দুই মাস এ সুবিধা পাবেন বলে জানা গেছে।

এছাড়া জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ৫৫ হাজার ২৯৩ জনকে ভাতা দিচ্ছেন। মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাচ্ছেন এক হাজার ৯৫৭ জন।

জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সদ্রাট বলেন, বাড়িতে গিয়ে ঘরে থাকা মানুষদের খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে এখন আর দৃশ্যমান কোন ত্রাণ তৎপরতা নেই। তবে খাদ্য সহায়তা অব্যাহত রয়েছে।

জেলা প্রশাসক সাবিনা বলেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার স্বার্থে বাড়ি বাড়ি ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। এজন্য দৃশ্যমান ত্রাণ তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।

এ সময় অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার রয়েছে যারা ত্রাণ চাইতে পারেন না। তাদের জন্য সামাজিক গণমাধ্যমে ইউএনওদের নম্বর দেয়া হয়েছে। তারা নিয়মিত যোগাযোগ করছেন। পরিচয় গোপন রেখে তাদের বাড়িতে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া অনেকেই এগিয়ে আসছেন। পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী বিভিন্ন কর্মসূচিও চালু রয়েছে। আশা করি এ জেলায় কোনো মানুষ না খেয়ে থাকবেন না।।

সফিকুল আলম/এমএএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।