৩২০ জন করোনায় আক্রান্তের মধ্যেই গাজীপুরে খুলল ৬৩৮ কারখানা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি গাজীপুর
প্রকাশিত: ০৯:৫৭ পিএম, ২৯ এপ্রিল ২০২০

গাজীপুরের শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে বুধবার বিকেলে বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ করেছেন দুটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। এতে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। পরে শিল্প পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুশান্ত সরকার জানান, গাজীপুরের দুই হাজার ৭২টি কারখানার মধ্যে বুধবার পর্যন্ত ৬৩৮টি কারখানা খোলা হয়েছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের শরীফপুর এলাকার টেক্স টেক কোম্পানি নামের পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বুধবার সকালে কাজে যোগ দিতে কারখানার গেটে আসেন। এ সময় কাজে যোগ দেয়ার জন্য সব শ্রমিককে কারখানায় প্রবেশ করতে দেয়া হলেও ৬০ জন শ্রমিকের কার্ড জমা নিয়ে তাদেরকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। দীর্ঘক্ষণ গেটে অপেক্ষার পরও তারা ভেতরে প্রবেশ করতে না পেরে অসন্তোষ দেখা দেয়।

তিনি বলেন, এই কারখানায় প্রায় ৯০০ শ্রমিক কাজ করেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতিতে ওই ৬০ শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে এমন সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এ সময় ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। বিকেল পর্যন্ত গেটে অবস্থান করে তারা কর্তৃপক্ষের কোনো সাড়া পায়নি। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানার পার্শ্ববর্তী ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ওপর অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এতে মহাসড়কের উভয় পাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

gazipur

গাজীপুর শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর ইস্কান্দর হাবিব বলেন, শ্রমিক অসন্তোষের খবর পেয়ে গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুশান্ত সরকার ঘটনাস্থলে যান। শ্রমিকদের শান্ত করার চেষ্টা করেন তিনি। এ সময় তিনি কারখানার মালিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ছাঁটাই প্রক্রিয়া প্রত্যাহার করে ওই ৬০ শ্রমিককে কাজে যোগ দেয়ার অনুমতির অনুরোধ জানান। পরে মালিকপক্ষ বৃহস্পতিবার থেকে ওই ৬০ শ্রমিককে কাজে যোগ দেয়ার অনুমতি দিলে আন্দোলনরত শ্রমিকরা বিকেল ৩টার দিকে মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন।

এছাড়া মহানগরীর টঙ্গীর আয়েশা গালিয়া পোশাক কারখানার শ্রমিকরা একই দিন বিক্ষোভ করেছেন। ওই কারখানার কয়েক শ্রমিককে ছাঁটাই করা হবে- এমন সংবাদ পেয়ে তারা সকাল থেকে কারখানার গেটে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা অবরোধের জন্য ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যাওয়ার চেষ্টা করেন। শ্রমিক অসন্তোষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে বলে জানান গাজীপুর শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টও ইসলাম হোসেন।

gazipur

গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুশান্ত সরকার বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে গাজীপুরের দুই হাজার ৭২টি কারখানা। এর মধ্যে বুধবার পর্যন্ত বিজিএমইএ’র ৩৫১টি, বিকেএমইএ’র ৪১টি, বিটিএমইএ’র ৩৬টি এবং অন্যান্য ২১০টি কারখানাসহ মোট ৬৩৮টি কারখানা খোলা হয়েছে। এদিন পর্যন্ত জেলার এক হাজার ৮৩৪টি কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ইতোমধ্যে পরিশোধ করা হয়েছে। অবশিষ্ট ২৩৮টি কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা নানা অজুহাতে এ পর্যন্ত পরিশোধ করা হয়নি। তবে জেলায় এ পর্যন্ত কোনো শ্রমিকের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়নি।

প্রসঙ্গত, বুধবার (২৯ এপ্রিল) পর্যন্ত গাজীপুরে ৩২০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যেই খুলে দেয়া হলো ৬৩৮ কারখানা।

আমিনুল ইসলাম/এএম/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।