পণ্যবাহী ট্রাকে করে ঢাকা থেকে পটুয়াখালীতে, ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ১৯ এপ্রিল থেকে লকডাউনে (অবরুদ্ধ) রয়েছে পটুয়াখালী জেলা। লকডাউন অবস্থা কার্যকর করতে দিন-রাত মাঠে কাজ করছে পুলিশ, সেনাবাহিনী, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তারপরও বিভিন্ন অজুহাতে সড়কে বের হচ্ছেন মানুষ। আর লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও জেলায় কখনও ট্রাক, অ্যাম্বুলেন্স, কাভার্ডভ্যান ও ট্রলারযোগে করোনার হটস্পট নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা থেকে আসছেন মানুষজন।
তবে জেলার প্রবেশ পথে রয়েছে পুলিশি চেক পোস্ট। ধরা পড়লেই জরিমানার সঙ্গে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
শুক্রবার (১ মে) বেলা ১১টায় শেখ কামাল সেতুর চেকপোস্টে পণ্যবাহী ট্রাকের মাধ্যমে গোপনে ঢাকা থেকে আগত নারী, শিশুসহ ১৫ জনকে আটক করেছে মহিপুর থানা পুলিশ। পরে মনোহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তাদের ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়।
মহিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুজ্জামান জানান, আটককৃতদের মনোহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
এদিকে, শহরের হেতালিয়া বাধঘাট থেকে চৌরাস্তার সড়কের ব্রাদার্স পাম্পে রওনা হয়েছেন মোটরসাইকেল চালক রফিক। চৌরাস্তা পুলিশ চেক পোস্টে থামানো হয় এ মোটরসাইকেল চালককে।
তিনি পুলিশকে বলেন, ‘বাজার করে আসলাম। গাড়িতে তেল শেষ তাই তেল ভর্তি করতে পাম্পে যাচ্ছি।’
একই সময় কথা হয় তেলিখালী এলাকার বাসিন্দা মো. ফারুক হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ঠিকাদারি কাজ করি। লেবাররা টাকা পাইবে, তাই টাকা নিতে ব্যাংকে আসছিলাম। পুলিশ চেক পোস্টে আটকে দিয়েছে। জরিমানা দিয়ে মুক্তি পেলাম।’
শহরের দুই নম্বর ব্রিজ এলাকা থেকে তিতাস পট্রি এলাকায় যাচ্ছিলেন রফিক মিয়া। চেক পোস্টে পুলিশ তাকে থামালে তিনি বলেন, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) তিতাস সিনেমা হলের ওই খানে একটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে গিয়েছিলাম। ক্লিনিকে টাকা দেয়া হয়নি। টাকা পরিশোধ করার জন্য বের হইছি। আমার এক স্বজনের ক্লিনিক দেখে বাকি দিয়েছেন।’
ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, লকডাউন ঘোষণার পরে মানুষকে সচেতন করার কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরপরও যারা সচেতন না হয়ে মহা সড়কে বের হয়েছেন, তাদের অনেকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৩০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পটুয়াখালী ট্রাফিক বিভাগের ইন্সপেক্টর শেখ মো. ইমরান হোসেন বলেন, ‘পটুয়াখালী জেলা পুলিশ লকডাউন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দিকনির্দেশনা মোতাবেক সেভাবে দায়িত্ব পালন করছি। তারপরও অনেক মানুষ বাইরে বের হচ্ছেন। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম অজুহাত দিচ্ছেন। আসলে এটা গ্রহণযোগ্য না। তারপরও আমরা মানুষদের বুঝাচ্ছি। সমগ্র পৃথিবী তথা বাংলাদেশে যে মহামারি চলছে সবাই একসঙ্গে মোকাবিলা করব ইনশাআল্লাহ।’
এফআর/পিআর