করোনায় মৃত কোনো ব্যক্তির প্রথম ময়নাতদন্ত সিলেটে, লাশ নেয়নি পরিবার
করোনাভাইরাসে মারা যাওয়া সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দি আহমদ হোসেনের (৫৫) মরদেহ নেয়নি পরিবার। বুধবার সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় নগরের মানিকপীরের টিলায় কারা কর্তৃপক্ষই তার মরদেহ দাফন করে।
এর আগে দেশে এই প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ওই বন্দির মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হয় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে।
বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছেন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. আব্দুল জলিল। তিনি বলেন, মারা যাওয়া আহমদ হোসেন সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়নের ঘড়াই গ্রামের বাসিন্দা। পরিবারের লোকজন গ্রামের বাড়িতে তার মরদেহ নিয়ে যেতে রাজি হননি। ফলে বুধবার বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে আমরা সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় মরদেহটি মানিকপীরের টিলায় দাফন করি। তবে ওই ব্যক্তির পরিবারের এক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
গত ১০ মে সিলেট শহীদ শামসদ্দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান একটি হত্যামামলায় দুই মাস ধরে কারাবন্দি আহমদ। পরদিন ১১ মে নমুনা পরীক্ষায় তার করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। পরে তার মরদেহ ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়।
বুধবার (১৩ মে) দুপুরে ওসমানী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন অ্যান্ড টক্সিকোলজি বিভাগের মর্গে আহমদ হোসেনের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শামসুল ইসলাম ও ডা. এন এম মিনহাজ প্রয়োজনীয় নিরাপত্তামূলক সরঞ্জাম পরিধান করে ময়নাতদন্তের কাজ করেন।
জানা গেছে, এই ময়নাতদন্তের বিষয়ে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল, মেডিকোলিগ্যাল সোসাইটির সভাপতি ডা. সেলিম রেজা, মহাসচিব ডা. সোহেল মাহমুদ প্রমুখ প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে ওসমানীর ফরেনসিক মেডিসিন অ্যান্ড টক্সিকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শামসুল ইসলাম বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তির ময়নাতদন্ত করলাম আমরা। ময়নাতদন্ত করতে সব ধরনের সাপোর্ট দিয়েছেন ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. ময়নুল হক। এছাড়া বিএমএ মহাসচিব, মেডিকোলিগ্যাল সোসাইটির সভাপতি ও মহাসচিব, ময়মনসিংহ মেডিকেলের মোখলেছ স্যার, মিটফোর্ডের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক বেলায়েত স্যার পরামর্শ দিয়েছেন।
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মুজিবুর রহমান বলেন, প্রথমবারের মতো করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলো। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আমরা এখনও পাইনি। আইনগতভাবে কোনো কারাবন্দি মারা গেলে তার ময়নাতদন্ত করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আর এ কারণেই ময়নাতদন্ত করতে হয়েছে।
ছামির মাহমুদ/বিএ