আ.লীগ নেতার চিঠিতে সিলেট থেকে ট্রাকে সাভার যাচ্ছিলেন তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক সিলেট
প্রকাশিত: ১০:৪৮ এএম, ১৮ মে ২০২০

রাত ১১টা। সিলেট নগরের সড়কগুলো নীরব। এমন সময় একটি ট্রাক এসে থামল। পাশের গলি থেকে ট্রাকটিতে উঠলেন ২০ জনের মতো শ্রমিক। ট্রাকের হেলপার সবাইকে চুপ থাকার নির্দেশনাও দিলেন। দেখেই বুঝা যাচ্ছিল লকডাউনে চুপিসারে তারা দূরে কোথাও যাচ্ছেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। এলাকাবাসীর বাধার মুখে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সবাইকে ট্রাক থেকে নামিয়ে বাসায় ফেরত পাঠিয়েছে। এ সময় নগর আওয়ামী লীগ নেতার স্বাক্ষরিত একটি চিঠি জব্দ করা হয়।

রোববার (১৭ মে) দিবাগত রাতে নগরের মীরবক্সটুলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সিলেট থেকে এসব শ্রমিক ঢাকার সাভারে যেতে চেয়েছিলেন। সড়কে যাতে সমস্যা না হয় সেজন্য দলীয় প্যাডে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ স্বাক্ষরিত একটি চিঠিও তাদের কাছে পাওয়া যায়। তবে মাসুক উদ্দিন আহমদ চিঠি দেয়ার কথা স্বীকার করলেও এটি কোনো ছাড়পত্র ছিল না বলে জানিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার রাত ১১টায় নগরের মীরবক্সটুলা এলাকায় একটি ট্রাক এসে দাঁড়ায়। এ সময় পাশের গলি থেকে একজন একজন করে ২০ জন শ্রমিক বের হয়ে ট্রাকে ওঠেন। ট্রাকে ওঠার সময় তাদের বার বার বলা হয় তারা যাতে মাথা নিচু করে বসে থাকেন। সবাই উঠে পড়লে ট্রাকটি ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দেন ট্রাকের হেলপার। এ ঘটনা দেখে করে এলাকাবাসী ট্রাকটির গতিরোধ করে কোতোয়ালি থানা পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায়।

এ সময় পুলিশ তাদের কাছে ঢাকা যাওয়ার কোনো প্রশাসনিক অনুমতি আছে কি-না জানতে চাইলে ট্রাকচালক সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের প্যাডে সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ স্বাক্ষরিত একটি পত্র দেখান। কিন্তু পুলিশ তাতে বাঁধ সাধে। এ ধরণের পত্রে কারো ঢাকায় যাওয়ার সুযোগ নেই বলে পুলিশ জানায়। পরে তাদের সবাইকে ট্রাক থেকে নামিয়ে নিজ নিজ বাসায় ফেরত পাঠায় পুলিশ। চিঠিতে এরা সবাই শ্রমিক, এদের আমি চেনা, তারা সবাই ভালো মানুষ এবং ঢাকার সাভারে যেতে চায়- এসব কথা উল্লেখ ছিল।

সিলেট কোতোয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সেলিম মিঞা বলেন, নগরের মীরবক্সটুলা থেকে ট্রাকে করে কিছু শ্রমিক ঢাকায় যাওয়ার সময় স্থানীয় জনতা তাদের আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে তাদের ট্রাক থেকে নামিয়ে দেয় এবং তাদের এভাবে বেআইনিভাবে যেতে দেয়া হয়নি।

এ বিষয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ বলেন, আমার স্বাক্ষরে যাওয়ার তো কোনো আইন নেই। এই শ্রমিকরা আমার পাশের বাসায় কাজ করতো। তাদের আমি চিনি, তারা ভালো মানুষ এই বলে আমি একটা স্বাক্ষর দিয়েছি। পরবর্তীতে পুলিশ তাদের ট্রাক থেকে নামিয়ে দেয়। তারা আবার নিজ বাসায় ফেরত চলে গেছেন।

ছামির মাহমুদ/আরএআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।