করোনা রোগীদের জন্য বরিশালে ৩০ হাজার টাকার ভেন্টিলেটর উদ্ভাবন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক বরিশাল
প্রকাশিত: ০৮:০৫ পিএম, ২৬ জুলাই ২০২০
বরিশাল ইউনিভার্সিটি অব গ্লোবাল ভিলেজের কোষাধ্যক্ষের তৈরি ইমার্জেন্সি মেডিকল ভেন্টিলেটর

বরিশাল ইউনিভার্সিটি অব গ্লোবাল ভিলেজের (ইউজিবি) কোষাধ্যক্ষ (ট্রেজারার) অধ্যাপক ড. মো. সৈয়দ আলী মোল্লা কম খরচে দেশীয় প্রযুক্তিতে ‘ইমার্জেন্সি মেডিকেল ভেন্টিলেটর’ তৈরির দাবি করেছেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সঙ্কটাপন্ন রোগীদের শ্বাসপ্রশ্বাস চালু রাখতে এ ভেন্টিলেটর উপকারে আসবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

রোববার (২৬ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর সিঅ্যান্ডবি রোডে ইউনিভার্সিটি অব গ্লোবাল ভিলেজ (ইউজিবি) মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভেন্টিলেটরটি প্রদর্শন করা হয়।

Barisal2

ভেন্টিলেটরটির বিষয়ে অধ্যাপক মো. সৈয়দ আলী মোল্লা বলেন, করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্র আক্রমণ করে। এতে আক্রান্ত কোনো রোগীর অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়ে। তখন ওই রোগী স্বাভাবিকভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে পারেন না। এ অবস্থায় ভেন্টিলেটরের মাধ্যমে রোগীর ফুসফুসে অক্সিজেন প্রদান ও কার্বন ডাই-অক্সাইড বের করে এনে শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখা হয়। তবে আমাদের দেশে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) এবং ভেন্টিলেটরের অপর্যাপ্ততা রয়েছে। বাংলাদেশে প্রতি সাড়ে তিন লাখ মানুষের জন্য মাত্র একটি করে ভেন্টিলেটর রয়েছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল এবং এর আমদানি ব্যয়ও অনেক। বিদেশ থেকে ভেন্টিলেটর আনতে গেলে প্রতিটির জন্য ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়। প্রায় পাঁচ মাস আগে এ নিয়ে ভাবতে শুরু করি; কীভাবে ভেন্টিলেটর তৈরি করা যায়।

অধ্যাপক সৈয়দ আলী মোল্লা বলেন, শ্বাসতন্ত্র সচল রাখার জন্য যেসব লজিক প্রয়োজন তা বিশ্লেষণ করে প্রথমে একটি প্রোগ্রাম তৈরি করি। প্রোগ্রাম শেষে দেশি-বিদেশি যন্ত্রাংশ কিনে ভেন্টিলেটর তৈরির কাজ শুরু করি। কয়েক মাসের প্রচেষ্টায় সফলতা আসে। এটি তৈরিতে আদর্শ ভেন্টিলেটরের মান অনুসরণ করা হয়েছে। এই ভেন্টিলেটর মূলত কোভিড-১৯ রোগীদের ব্যবহারের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে এটির নির্মাণ ব্যয় কম রাখা সম্ভব হয়েছে। এ ভেন্টিলেটর দেশে উৎপাদন করা হলে খরচ অনেক কম হবে।

Barisal2

উদ্ভাবক ড. সৈয়দ আলী মোল্লা বলেন, কয়েক দিনের মধ্যে এই ভেন্টিলেটরের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করা হবে। এটি চিকিৎসাখাতে ব্যবহারের জন্য সরকারি অনুমোদন প্রয়োজন। শিগগিরই অনুমোদনের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করা হবে। প্রথম ভেন্টিলেটরটি তৈরি করতে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। তবে একসঙ্গে একাধিক ভেন্টিলেটর তৈরি করলে ব্যয় অনেক কমে যাবে। সেক্ষেত্রে মাত্র ৩০-৩৫ হাজার টাকায় ভেন্টিলেটর তৈরি করা সম্ভব।

ড. সৈয়দ আলী মোল্লা বলেন, আমার প্রত্যাশা, এই ভেন্টিলেটর অনুমোদনের পর বাজারে এলে দেশের ভেন্টিলেটর সঙ্কট সমস্যার সমাধান হবে। ভেন্টিলেটর তৈরিতে ইউনিভার্সিটি অব গ্লোবাল ভিলেজ কর্তৃপক্ষ বিভিন্নভাবে আমাকে সহায়তা করেছে। এজন্য কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি অ্যাডভোকেট মো. আফজাল হোসেন, বিওটি চেয়ারম্যান ড. মো. ইমরান চৌধুরী ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. লোকমান খান উপস্থিত ছিলেন।

সাইফ আমীন/এএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।