মাস্ক ছাড়া বিক্রি নয়

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মৌলভীবাজার
প্রকাশিত: ০২:৪৫ এএম, ২৯ জুলাই ২০২০

কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত বাংলাদেশসহ সারা বিশ্ব, বাদ যায়নি মৌলভীবাজার জেলাও। বারবার সতর্ক করে দেয়ার পরও সাধারণ মানুষের একটি অংশ সচেতন হচ্ছে না। মাস্ক ছাড়াই বাইরে বের হচ্ছে, ভিড় করছে ঈদের শপিংয়ে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনাকাটার নির্দেশ থাকলেও তা মানছে না। করোনার শুরু থেকেই নানাভাবে মানুষকে সচেতন করা এবং স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করতে কাজ করছে মৌলভীবাজার পুলিশ।

এবার ঈদ উপলক্ষে শপিংমল এবং দোকানপাটে মানুষকে করোনা থেকে মুক্ত রাখতে ব্যতিক্রম একটি উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ। ‘নো মাস্ক নো সেল’ (মাস্ক ছাড়া বিক্রি নয়) স্লোগানে মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি মাস্ক ছাড়া কেউ প্রবেশ করলে তার কাছে পণ্য বিক্রি না করতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্ববান জানিয়েছে।

মঙ্গলবার থেকে পুলিশের এই প্রচার শুরু হয়েছে জেলা শহর থেকে। তবে তা প্রান্তিক এলাকায় বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ নিয়েছে পুলিশ। পুলিশের এই নির্দেশনা বড় বড় ডিপার্টমেন্টাল স্টোর থেকে মুদি দোকান ও মাছ বাজার পর্যন্ত পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে শহরের পশ্চিমবাজার এলাকায় পুলিশ সুপার ফারুক আহমদ নিজে ব্যবসায়ীদের কাছে বার্তা পৌঁছে দেন এবং সাধারণ মানুষকেও সচেতন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র ফজলুর রহমান, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান (জিয়া), মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন, ওসি (তদন্ত) পরিমল চন্দ্র দেব, ওসি (অপারেশন) হুমায়ুন কবিরসহ ট্রাফিক পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

যারা মাস্ক পরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শপিংয়ে বের হয়েছেন তাদের ফুল দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। এই উদ্যোগের ফলে বদলে গেছে স্বাস্থ্যবিধি মানার চিত্র, যারা আগে মাস্ক ছাড়া শপিংয়ে যেতেন তারাও মাস্ক পরছেন।

মৌলভীবাজার বিজনেস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসাইন বলেন, করোনা সংক্রমণরোধে সবার স্বাস্থ্যবিধি মানা প্রয়োজন। পুলিশের এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি। এতে আমাদের এবং ক্রেতাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা পাবে। সব ব্যবসায়ী ও ক্রেতা এটা মেনে চলবেন সেই প্রত্যাশা করছি এবং আমরাও স্বাস্থ্যবিধি না মানলে কোনো পণ্য না বিক্রির জন্য প্রচার চালাব।

এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা চালু করলেও সাধারণ মানুষকে সচেতন করা বড় চ্যালেঞ্জ। তবে পুলিশের এই উদ্যোগ সুন্দরভাবে মনিটর করলে সফল হবে।

রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, ‘নো হেলমেট নো ওয়েল’ এই উদ্যোগ কাজে দিয়েছে। এখন হেলমেট ছাড়া কেউ বের হতে চান না কারণ তেল পাওয়া যাবে না। আগের এই উদ্যোগের মতো এটিও সফল হবে এবং করোনার সংক্রমণ কমে আসবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।

মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার ফারুক আহমদ জাগো নিউজকে বলেন, করোনার শুরু থেকে মাঠে থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ। ‘নো মাস্ক নো সেল’ উদ্যোগটিও তারই অংশ। আমরা এই উদ্যোগকে গ্রামপর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই। গ্রামের বাজারে এটা কার্যকর করা চ্যালেঞ্জ তবে আমরা সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েই কাজ করব। মানুষের স্বাস্থ্যনিরাপত্তা সবার আগে।

তিনি আরও বলেন, করোনার সংক্রমণরোধে শহরে মাস্ক ছাড়া কেউ প্রবেশ করতে পারবে না, এটি বাস্তবায়নে পুলিশ সর্বোচ্চ শতভাগ চেষ্টা চালাবে।

উল্লেখ্য, জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় জানিয়েছে, মৌলভীবাজারে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৯৩৫ জন, মারা গেছেন ১০ জন।

রিপন দে/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।