করোনা : পরিত্রাণ পেতে ৩০ হাফেজের প্রতিদিন কোরআন খতম
করোনাভাইরাসের মহামারি থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষায় বিশেষ প্রার্থনা হিসেবে পঞ্চগড়ে প্রতিদিন এক খতম (শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পাঠ করা) করে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করা হচ্ছে। গত বছরের মার্চে করোনা প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে পঞ্চগড় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ঈমাম মুফতি আহমাদুল্লাহ মাসরূরর নেতৃত্বে ৩০ জন হাফেজ প্রতিদিন এক পারা করে ৩০ পারা কোরআন তেলাওয়াত করছেন।
মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত করোনা বিষয়ক এক মতবিনিময় ও প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ২২৪তম কোরআন খতম করেন এসব হাফেজ। এ নিয়ে বিশেষ মোনাজাতের পর জেলা প্রশাসক ড. সাবিনা ইয়াসমিন উপহার হিসেবে হাফেজদের হাতে একটি করে পাঞ্জাবি তুলে দেন।
পরে জেলা প্রশাসন ও ইউনিসেফ বাংলাদেশের সহযোগিতায় কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সরকার মোহাম্মদ রায়হান। এতে জেলা প্রশাসক ড. সাবিনা ইয়াসমিন প্রধান অতিথি এবং পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বিশেষ অতিথি ছিলেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচলক শামীম সিদ্দিক। অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পঞ্চগড় প্রেসক্লাবের সভাপতি সফিকুল আলম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর কর্মশালায় সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. তোফায়েল আহমদ করোনাভাইরাস নিয়ে প্রজেক্টরের মাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। শেষে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাস্টার ট্রেইনার মাওলানা মো. আব্দুস সামাদ। এতে পঞ্চগড় কেন্দ্রীয় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি আহমাদুল্লাহ মাসরূর, সাবেক পেশ ঈমাম মুফতি আ ন ম আব্দুল করিমসহ বিভিন্ন মসজিদের ইমামরা উপস্থিত ছিলেন।
দিনব্যাপী কর্মশালায় করোনা নিয়ে গুজব ও বিভ্রান্তির ক্ষতির দিক সর্ম্পকে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি, করোনা সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচার জন্য করণীয়, মানসিক স্বাস্থ্যসুরক্ষা, মৃত ব্যক্তির দাফন-কাফনে ইসলামের বিধান, করোনাভাইরাসে মৃতব্যক্তির লাশ ধর্মীয় বিধান অনুসারে নিরাপদভাবে দাফন কাজে সুরক্ষা সামগ্রীর ব্যবহার ও জীবাণুমুক্তকরণ বিষয়ে ধারণা দেয়া হয়।
পঞ্চগড় কেন্দ্রীয় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি আহমাদুল্লাহ মাসরূর বলেন, ‘করোনা মহামারির শুরু থেকে দেশ ও জাতিকে করোনা মহামারি থেকে রক্ষায় বিশেষ প্রার্থনা করা হচ্ছে। আমরা ৩০ জন হাফেজকে নিয়ে একটি দল গঠন করেছি। গত বছরের মে মাসের ২৭ তারিখ ৩০ জন হাফেজ এক পারা করে প্রথম ৩০ পারা অর্থাৎ এক খতম পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন। এরপর প্রতিদিন এভাবে এক খতম করে কোরআন তেলাওয়াত করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জেলা প্রশাসক ড. সাবিনা ইয়াসমিন আমাদের এ কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। আমরা এখনো প্রতিদিন এক খতম করে কোরআন তেলাওয়াত করছি। মঙ্গলবার ২২৪তম কোরআন খতম করে করোনাভাইরাস থেকে রক্ষায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।’
সফিকুল আলম/এসআর/এমএস