বাদাম বিক্রেতার ছেলের মেডিকেলে ভর্তি এখন অনিশ্চিত

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নীলফামারী
প্রকাশিত: ১২:০৯ পিএম, ১৪ এপ্রিল ২০২১

বাদাম বিক্রি করে সংসার চালানোর সময় স্বপ্ন দেখতেন ছোট ছেলেকে ডাক্তারি পড়াবেন। সেই স্বপ্ন আজ সত্যিও হয়েছে। ছেলে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। আর তাতেই রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে হতদরিদ্র বাবার।

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানি ইউনিয়নের হতদরিদ্র ভুপেন্দ্র অধিকারীকে নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছে হতদরিদ্র পরিবারটি।

চলতি বছর এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে ভুপেন্দ্র। কিন্তু অর্থাভাবে তার মেডিকেল কলেজে ভর্তিতে দেখা দিয়েছে চরম অনিশ্চয়তা। মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার মতো কোনো টাকা-পয়সা নেই তার পরিবারের।

ভুপেন্দ্র নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানী ইউনিয়নের দিঘির পাড় গ্রামের মতিলাল অধিকারী ও বাসন্তী অধিকারীর সাত সন্তানের মধ্যে পঞ্চম। তিন ভাইয়ের মধ্যে সে সবার ছোট। বড় দুই ভাই রিকশা চালান।

ভুপেন্দ্রর বাবা মতিলাল অধিকারী একজন বাদাম বিক্রেতা এবং মা গৃহিণী। এতদিন বাদাম বিক্রি করেই তিনি ভূপেন্দ্রর পড়াশোনার খরচ চালিয়েছেন। এখন বয়স হওয়ায় বাদামের ব্যবসা করার সক্ষমতাও তার আর নেই।

ভুপেন্দ্র অধিকারী জাগো নিউজকে বলেন, তিন ভাই ও চার বোন মিলে আমরা মোট সাত ভাইবোন। ভাইদের মধ্যে আমি সবচেয়ে ছোট। আমার বড় ভাইয়েরা অশিক্ষিত। তারা তাদের পরিবার নিয়ে নিজেরাই হিমশিম খাচ্ছে। তারা দুজনই ঢাকা ও বগুড়ায় রিকশা চালান। অন্যদিকে তিন বোনের বিয়ে হয়েছে। ছোটবোন পুস্পমিতা অধিকারী ৫ম শ্রেণিতে পড়াশুনা করে।

হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান ভুপেন্দ্র ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ায় ভীষণ আগ্রহী। সে ডালিয়া চাপানী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৮ সালে এসএসসি পাস করে। পরবর্তীতে রংপুর সরকারি কলেজ থেকে ২০২০ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়।

ভুপেন্দ্রর বাবা মতিলাল অধিকারী বলেন, ছেলেটাকে ঠিকভাবে লেখাপড়ার খরচ দিতে পারিনি। তারপরও সে নিজের আগ্রহ ও কঠিন পরিশ্রমে লেখাপড়া অব্যাহত রেখেছে। এখন ছেলে মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে অনেক টাকা-পয়সা লাগবে। এত টাকা কিভাবে জোগাড় করবো তা ভেবে পাচ্ছি না।

‘তাছাড়া ছেলেকে মেডিকেল কলেজে লেখাপড়া করাতেও প্রতিমাসে মোটা অঙ্কের খরচ লাগবে। সেই খরচইবা কিভাবে যোগাড় করব আমি? সংসারের যা অবস্থা তিন বেলা খেতেই পাই না।’

তাই তিনি ছেলের মেডিকেল কলেজে ভর্তি ও লেখাপড়া চালিয়ে নিতে সমাজের হৃদয়বান ও বিত্তশালীদের কাছে সহায়তা কামনা করেন।

জাহেদুল ইসলাম/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।