ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে মিলছে ৪০ টাকায় দুধ
তুলনামূলক কম দামে ভালো মানের দুধ। লাইনে দাঁড়িয়ে কিনছেন ক্রেতারা। শুধু তাই নয়, সিরাজগঞ্জ জেলার পৌর ও উপজেলা পর্যায়ে ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে পাওয়া যাবে ৭০ টাকায় এক ডজন ডিম।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতর, এলডিডিপি প্রকল্প ও শাহজাদপুর ডেইরি অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ উদ্যোগে ন্যায্যমূল্যে দুধ ও ডিম বিক্রির এ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারঘোষিত লকডাউন ও রমজানে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে খামারে উৎপাদিত দুধ সরাসরি ভোক্তার কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্যে পরিচালিত এ কার্যক্রমে খামারি ও ভোক্তা লাভবান হচ্ছেন।
শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৩ সালে সিরাজগঞ্জে সমবায়ভিত্তিক রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান মিল্কভিটার একটি দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা গড়ে ওঠে। এরপরই অঞ্চলটিতে হাজার হাজার গরুর খামার গড়ে ওঠে। সেখান থেকে মিল্কভিটা এখন প্রতিদিন ২ লাখ ২৫ হাজার লিটার দুধ সংগ্রহ করে।
তরল দুধ, পাউডার দুধ, কনডেন্সড মিল্ক ও খাঁটি গাওয়া ঘি তৈরি করে দেশের সিংহভাগ চাহিদা পূরণ করছে। বর্তমানে শাহজাদপুর উপজেলায় সমবায় ভিত্তিক গরুর খামার থেকে প্রতিদিন সাড়ে ৩ লাখ লিটার দুধ উৎপাদন হয়। এখান থেকে প্রতিদিন মিল্কভিটা ৯০ হাজার লিটার, প্রাণ ৪০ হাজার লিটার, আড়ং ১০ হাজার লিটার ও ইগলু ১ হাজার লিটারসহ বিভিন্ন মিষ্টির দোকান ও ঘোষেরা বাদবাকি দুধ ক্রয় করেন থাকেন।
শনিবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমান জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় সরকারের এক সপ্তাহের লকডাউনে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে উৎপাদিত এখন ভ্রাম্যমাণ ভ্যান গাড়িতে বিক্রি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রথমদিকে দুটি গাড়িতে দুধ রাখা হয়েছে ১৫০ লিটার। বর্তমানে প্রতিদিন দুটি ভ্রাম্যমাণ ভ্যান গাড়িতে ১ হাজার লিটার দুধ পৌর ও উপজেলার বিভিন্নস্থানে ন্যায্যমূল্যে ৪০ টাকা লিটার বিক্রি হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, পাশাপাশি ৪ হাজারের বেশি মুরগির ডিমও বিক্রি হচ্ছে। তুলনামূলক দুধ ও ডিমে দাম কম হওয়ায় দিনদিন দুধের চাহিদাও বাড়ছে। ভ্রাম্যমাণ গাড়ির সঙ্গে রয়েছেন একজন খামারি ও প্রাণিসম্পদ অফিসের একজন স্টাফ।
প্রাণিসম্পদের এই কর্মকর্তা জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যে উৎপাদিত দুধ নিয়ে খামারি বিপাকে পড়লেও মিল্কভিটা, প্রাণ, আড়ংসহ অন্যান্য কোম্পানিগুলো দুধ কেনা অব্যাহত রাখায় এখন অনেকটাই স্বস্তিতে রয়েছেন। তবে মিষ্টির দোকান, ঘোষ ও চা স্টল বন্ধ এবং হাটবাজারে লোক সমাগম কমে যাওয়ায় খোলাবাজারেও খুচরা দুধের চাহিদা কমে গেছে। তবে রমজান মাস হওয়াতে দুধের চাহিদা অনেকটাই বেড়ে গেছে।
মিল্কভিটার পরিচালক ও শাহজাদপুর ডেইরি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সামাদ ফকির বলেন, ‘লকডাউনে শুরু হওয়ায় খামারিরা অনেকটা দুর্ভোগে পড়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর, এলডিডিপি প্রকল্প ও শাহজাদপুর ডেইরি অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ যানবাহনের মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে ৪০ টাকা কেজি দরে দুধ বিক্রির কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়া করোনার এই দুর্যোগেও মিল্কভিটা, প্রাণ, আড়ংসহ অন্যান্য কোম্পানিগুলো ন্যায্যমূল্যে উৎপাদিত দুধ কেনায় স্বস্তিতে রয়েছেন খামারিরা। যদি এই কোম্পানিগুলো দুধ না কিনতে তাহলে খামারিদের পথে বসতে হতো।’
ইউসুফ দেওয়ান রাজু/এসজে/এএসএম