সিলেটে ঈদের নামাজে করোনা থেকে মুক্তির দোয়া
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী এবারও উন্মুক্ত স্থানে বা ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়নি। এ কারণে সিলেটের তিনশ বছরের ঐতিহ্যবাহী শাহী ঈদগাহসহ নগর ও শহরতলির কোনো ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হয়নি ঈদের জামাত। মসজিদে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়েছে করোনাকালে ঈদ জামাত। দু-একটি বাদে কোনো মসজিদেই মানা হয়নি স্বাস্থ্যবিধি। তবে করোনায় সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে অন্য ঈদে কোলাকুলি করার রেওয়াজ থাকলেও এবার ছিল ব্যতিক্রম।
গত বছরের মতো এবারও এক মাস সিয়াম সাধনার পর মহামারির মধ্যেই এসেছে ঈদ। সংক্রমণ এড়াতে তাই নানা বিধিনিষেধের মধ্যে মসজিদে মসজিদে ঈদের নামাজে অংশ নেন মুসল্লিরা।
সিলেটে এবার ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় হজরত শাহজালাল (রহ) দরগাহ মসজিদে সকাল ৮টায়। নামাজ শেষে মোনাজাতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতদের জন্য দোয়া করা হয়। দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনার পাশাপাশি মহামারি করোনা থেকে মুক্তির জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করেন মুসল্লিরা।
প্রতি বছর সিলেট নগরে সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয় শাহী ঈদগাহে; যেখানে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়। তবে গত বছরের মতো এবারও সেখানে ঈদের জামাত হয়নি করোনা সংক্রমণের বিধিনিষেধের কারণে।
সিলেট মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মহানগরের ছয়টি থানা এলাকার প্রায় এক হাজার ১০০ মসজিদে এবার ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নামাজ শেষে বাংলাদেশকে করোনামুক্ত করতে এবং সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ‘তৌফিক’ দিতে আল্লাহর কাছে মোনাজাত করেন মুসল্লিরা। এছাড়াও ফিলিস্তিনসহ সারা পৃথিবীর মুসলমানদের হেফাজত করতে মহান আল্লাহর কাছে আকুতি জানানো হয়।
বাসা থেকে অজু করে, মাস্ক পরে ও জায়নামাজ নিয়ে ঈদের জামাতে অংশ নেন মুসল্লিরা। জামাত শেষে কোলাকুলি ও হাত মেলাতে মানা থাকায় অধিকাংশকে হাত মেলাতে বা কোলাকুলি করতে দেখা যায়নি। ফলে অনেকেই নামাজ শেষে একটু কষ্ট মনে নিয়েই ফিরেছেন ঘরে।
তারা জানান, ঈদের নামাজের পর কোলাকুলিতেই প্রধান আনন্দ। নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থেই এবার বিরত থাকতে হচ্ছে হাত মেলানো ও কোলাকুলি থেকে।
নগরের বন্দরবাজারের কুদরত উল্লাহ জামে মসজিদে এবার তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে ৭টা, সাড়ে ৮টা ও সাড়ে ৯টায়। সিলেট কালেক্টরেট মসজিদে অনুষ্ঠিত হয় চারটি ঈদ জামাত। এছাড়াও নগরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের আগপাড়া জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টায় ও সকাল সাড়ে ৮টায়, ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায় ও ৯টায়, ঝেরঝেরিপাড়া জামে মসজিদে সকাল ৫টা ৪০ মিনিটে এবং সকাল ৮টায়, ঝরনার পাড় জামে মসজিদে সকাল ৮টায়, বায়তুন নূর জামে মসজিদে (পূর্ব ঝরনার পাড়) সকাল সাড়ে ৮টায়, কুমারপাড়া জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টায় এবং সকাল সাড়ে ৮টায়, খন্দকার জামে মসজিদে (সেবক রায়নগর) সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে জামাত অনুষ্ঠিত হয়। শাহী ঈদগাহ হাজারীবাগ জামে মসজিদে সকাল ৮টায় ও ৯টায়, শাহ মীরারজী (রহ) মাজার মসজিদে সকাল ৮টায় ও ৯টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
ছামির মাহমুদ/এআরএ/এমকেএইচ