যাত্রীর চাপে ফেরিতে পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার ব্যাহত, চালকদের দুর্ভোগ
লকডাউনের নির্দেশনা অনুযায়ী শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে শুধুমাত্র পণ্যবাহী ও জরুরি গাড়ি পারাপারে সচল রয়েছে ফেরি চলাচল। তবে রোববার (২৭ জুন) দিনভর লৌহজংয়ের শিমুলিয়া ঘাটে দেখা যায় উল্টো চিত্র। লকডাউন বিধি উপেক্ষা করে এদিন শিমুলিয়া ঘাটে উপস্থিত হওয়া দক্ষিণবঙ্গগামী উপচেপড়া যাত্রী ও ব্যক্তিগত গাড়ি ফেরিতে পারাপার হতে দেখা যায়। এতে দিনভর ব্যাহত হয় পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার। ফলে ঘাট এলাকায় একদিকে তৈরি হয় এসব গাড়ির দীর্ঘ সারি, অন্যদিকে ভোগান্তিতে পড়েন শত শত ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানচালক। ১৮ থেকে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় অপেক্ষা করেও ফেরিতে উঠতে পারেননি বলে জানান অনেক চালক।
সরেজমিনে রোববার বিকেলে ঘাট এলাকায় দেখা যায়, ফেরিতে ওঠার অপেক্ষায় রয়েছে শত শত ট্রাক। এর মধ্যে কোনো চালক ৮ ঘণ্টা, কেউ ১৮ ঘণ্টা আবার অনেকে ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ফেরিতে উঠতে পারেননি। লকডাউনে দোকান বন্ধ থাকায় খাবার ও বিভিন্ন সমস্যা পোহাতে হয় তাদের। বিশেষ করে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে তাদের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। দীর্ঘ সময় অপক্ষোর কারণে আর্থিক ক্ষতি আর খাবারের কষ্টে চরম দুর্ভোগের কথা জানান চালকরা।
অপেক্ষারত ট্রাকচালক মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘ভোর ৩টার সময় আসছি, এখন বিকেল ৫টা। ১৪ ঘণ্টা ধরে গাড়ি নিয়ে বসে আছি। আমার সঙ্গে একজন ১৮ ঘণ্টা ধরে ধরে বসে আছে। আমাদের ছাড়ে না শুধু যাত্রী আর ছোট গাড়ি ছাড়ছে।’
হাবিবুর রহমান কিরণ নামের আরেক ট্রাকচালক বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) ভোর ৬টায় আসছি। এখনো সিরিয়াল পাইনি।’
ট্রাকচালক লিটন হোসেন বলেন, ‘শুনছি যে পণ্যবাহী ট্রাক পারাপারের জন্য ফেরি চলছে। কিন্তু আমাদের গাড়ি তো পার করে না। যাত্রী আর প্রাইভেটকারই পার হচ্ছে। এ কেমন নিয়ম?’
আরেক চালক আজহার বলেন, ‘লকডাউনে ঘাটের দোকানপাঠ বন্ধ। আমাদের খেয়ে না খেয়ে থাকতে হচ্ছে। আর সাধারণ মানুষ আসছে-যাচ্ছে। আমাদের দেখার কেউ নেই। একদিন গাড়ি নিয়ে বসে থাকলে ৩-৪ হাজার টাকা লোকসানের কবলে পড়তে হচ্ছে।’
মিশু নামের আরেক ট্রাকচালক বলেন, ‘প্রতিটি ফেরিতে যদি ৩-৪টা করেও গাড়ি পার করতো আমাদের দুর্ভোগ তাড়াতাড়ি শেষ হতো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কথা বলতে রাজি হননি মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বরত কেউ।
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসি শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক সাফায়েত আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘দিনভর ঘাটে যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপ ছিল। তাই পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। তবে রাতের মধ্যে ঘাটে অপেক্ষারত সব গাড়িই পারাপার হয়ে যাবে।’
যাত্রী পারাপারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যাত্রীদের ক্ষেত্রে আমাদের সুনিদিষ্ট নির্দেশনা নেই। তবে গণপরিবহন বন্ধ থাকার নির্দেশনা রয়েছে। ঘাটে যারা আসছে তারা পার হচ্ছে। বর্তমানে নৌরুটে ১৪টি ফেরি সচল রয়েছে।’
আরাফাত রায়হান সাকিব/ইএ/এমকেএইচ