কিট সংকটে তিনদিন ধরে বন্ধ র‌্যাপিড টেস্ট, বিপাকে ভুক্তভোগীরা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রকাশিত: ০৪:১৫ এএম, ২৬ আগস্ট ২০২১

২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে কিট সংকটের কারণে গত তিনদিন ধরে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণে র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে এই হাসপাতাল থেকে তাৎক্ষণিকভাবে করোনা পরীক্ষার ফলাফল জানতে পারছেন না রোগীরা।

এখন শুধু ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারের পিসিআর ল্যাব থেকে আসা পরীক্ষার ফলাফলে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা যাবে। এতে করে বিপাকে পড়তে হচ্ছে করোনায় আক্রান্ত রোগী ও চিকিৎসকদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত রোববার (২২ আগস্ট) ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের কিছু রোগীর র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের করার পর কিট শেষ হয়ে যায়। এরপর তিনদিন ধরে যেসব রোগীর নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে, তা ঢাকায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হচ্ছে। ফলে সোমবারের থেকে যেসব রোগীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, তারা ঢাকা থেকে রিপোর্ট আসার পর ফলাফল জানাতে পারবেন। যা অ্যান্টিজেন টেস্টে আধাঘণ্টার মধ্যে জানা সম্ভব হতো।

বুধবার হাসপাতালে নমুনা দিতে আসা একাধিক ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যদি তাৎক্ষণিকভাবে ফলাফল না জানা যায় তাহলে তো বেকায়দায় পড়তে হবে। পরিবারের সদস্যরাও ঝুঁকিতে থাকবে। যতটুকু জানতে পেরেছি, পিসিআর ল্যাব থেকে রিপোর্ট আসতে অনেক সময় লাগে।

২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, প্রথম দফায় স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে অ্যান্টিজেন পরীক্ষার জন্য ৫০০ কিট, দ্বিতীয় দফায় ছয় হাজার, তৃতীয় দফায় চার হাজার ও চতুর্থ দফায় দুই হাজার কিট পাঠানো হয়। গত বছরের ৫ ডিসেম্বর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা শুরু হয়। ডিসেম্বর থেকে চলতি মাসের গত সোমবার পর্যন্ত হাসপাতালে ১১ হাজার ৬৮টি অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রতিদিন হাসপাতালে ১৫০ থেকে ২০০ রোগীর অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হতো।

জেলা শহরের উত্তর পৈরতলার নওশাদ চিশতি বলেন, করোনাভাইরাস শনাক্ত করতে গত ২৯ জুলাই আমার পরিবারের ছয়জন সদস্যের অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় নমুনা দেই। এরপর আমি ও আমার স্ত্রী ছাড়া বাকি চারজনের রেজাল্ট পজিটিভ আসে। কিন্তু অ্যান্টিজেন টেস্টে নেগেটিভ হলেও অনেকেই এরই মধ্যে পিসিআর ল্যাব থেকে আসা রিপোর্টে পজিটিভ হয়েছেন। তাই পিসিআর রিপোর্টের অপেক্ষায় ছিলাম।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিনেও পিসিআর ল্যাবের ম্যাসেজ না পাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। রিপোর্ট আসা পর্যন্ত আমাকে সাবধানে থাকতে হয়েছিল। অবশেষে নমুনা দেওয়ার ১১ দিন পর ৮ আগস্ট সন্ধ্যায় আমার ও স্ত্রীর ম্যাসেজ আসে নেগেটিভ। এতো দেরিতে যদি ফলাফল আসে তাহলে কীভাবে নিরাপদে থাকবো।’

আরাফাত আহমেদ নামে আরেক ব্যক্তি জানান, গত ৭ আগস্ট আমিসহ আমার পরিবারের চারজন নমুনা দেই। অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় আমার ও আমাদের গৃহকর্মীর নেগেটিভ আসে। একজনের পজিটিভ আসে। কিন্তু পিসিআর ল্যাবের ম্যাসেজ আসে ১৭ দিন পর গত ২৩ আগস্ট।

এ বিষয়ে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, অ্যান্টিজেন কিট সংকট হওয়ায় আমরা নমুনা পরীক্ষা করতে ঢাকায় পিসিআর ল্যাবে পাঠাচ্ছি। যেসব রোগীর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার লক্ষ্মণ আছে তাদের আমরা আলাদা ওয়ার্ডে ভর্তি করছি। রিপোর্ট দেরিতে আসায় রোগীরা কিছুটা সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় কিট কবে নাগাদ আবার আসতে পারে তা এখনই বলা যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।

আবুল হাসনাত মো. রাফি/এআরএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।