বীর মুক্তিযোদ্ধার জাতীয় পরিচয়পত্রে টিকা নিলেন আরেকজন
বগুড়ায় এক বীর মুক্তিযোদ্ধার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিয়ে অন্য একজন টিকা গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। ৭ আগস্ট প্রথম দফা গণটিকা কর্মসূচি চলাকালে বগুড়া পৌরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে বিপাকে পড়েছেন ৭৪ বছর বয়সী বীর মুক্তিযোদ্ধার জাফর উদ্দিন মন্ডল। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তার টিকা গ্রহণ।
তবে বিষয়টি জানার পর সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) এই বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রথম ডোজের টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন বগুড়া সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সামির হোসেন মিশু।
বীর মুক্তিযোদ্ধা জাফর উদ্দিন মন্ডল জানান, তিনি টিকা না নিলেও স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর তার মোবাইল ফোনে একটি ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হয়। সেখানে তাকে পরদিন ৯ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিতে বলা হয়। ওই বার্তা পাওয়ার পর তিনি রীতিমত বিস্মিত হন। পরবর্তীতে তিনি নিকটবর্তী মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের টিকা কেন্দ্রে যোগাযোগ করলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাকে জানান জাফর উদ্দিন মন্ডলের নামে করোনার প্রথম ডোজের টিকা দেওয় হয়েছে। প্রমাণ হিসেবে কর্তৃপক্ষ তার হাতে জাতীয় পরিচয়পত্র ভিত্তিক টিকা গ্রহণ সংক্রান্ত অনলাইন থেকে প্রিন্ট করা একটি ডকুমেন্টও তুলে দেন।
তিনি বলেন, ওই ডকুমেন্টের সব তথ্যই ঠিক আছে। কেবল আমি টিকা নিয়েছি এটাই মিথ্যা। তারপর মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বলি যে আমি টিকা নিইনি। উল্টো আমার জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে অন্য কেউ টিকা নিয়েছে। আমি এখন টিকা নিতে চাই। আমাকে রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ দেওয়া হোক। তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায় ডকুমেন্ট অনুযায়ী আপনি টিকা নিয়েছেন। অতএব নতুন করে আর রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ নেই। আপনি বগুড়া সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়ে যোগাযোগ করে সমস্যার কথা জানান।
জাফর উদ্দিন বলেন, পরে আমি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়ে যাই। সেখানে টিকাদান কর্মীদের সঙ্গে দুদিনে একাধিকবার কথা বলি। তাতেও কোনো কিছু না হওয়ায় ২০ সেপ্টেম্বর আমি সরাসরি বগুড়া সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সামির হোসেন মিশুর সঙ্গে দেখা করে আমার সমস্যার কথা বলি। সবকিছু শোনার পর তিনি ওইদিনই আমাকে সিনোফার্মের প্রথম ডোজের টিকার ব্যবস্থা করেন।
এ বিষয়ে ডা. সামির হোসেন মিশু বলেন, এ ধরনের ঘটনা আরও কয়েকটি ঘটেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। আমরা ধারণা করছি কোনো ব্যক্তি মুক্তিযোদ্ধা জাফর উদ্দিন মন্ডলের জাতীয় পরিচয়পত্র চুরি করে ৭ আগস্ট গণটিকা কার্যক্রমের আওতায় টিকা গ্রহণ করেছেন। ওয়ার্ড পর্যায়ে চলা গণটিকা কর্মসূচিতে যেহেতু বিপুল সংখ্যক মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে সে কারণে হয়তো টিকা প্রদানের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরাও একজনের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে অন্যের টিকা গ্রহণের বিষয়টি বুঝতে পারেননি।
এক প্রশ্নের জবাবে ডা. সামির হোসেন মিশু বলেন, প্রতারক ব্যক্তি হয়তো করোনার টিকার দুই ডোজই গ্রহণ করেছেন। তবে প্রতারণার মাধ্যমে টিকা নিতে পারলেও প্রকৃতভাবে নিজের নামে সনদ তিনি পাবেন না।
এসজে/জেআইএম