কুমার নদে ২৮০ মিটার সেতু নির্মাণ শেষের পথে, মার্চে চালু

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মাদারীপুর
প্রকাশিত: ০৭:৩২ পিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২
সেতু নির্মাণ শেষ চলছে সংযোগ সড়কের কাজ

মাদারীপুরের রাজৈরের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছয়টি ইউনিয়নের ৩ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। তাদের যাতায়াতে অন্যতম মাধ্যম খেয়া পারাপার। কিন্তু সামান্য বৃষ্টি বা প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ এলেই বন্ধ হয়ে যায় খেয়া। এতে বিপাকে পড়তে হয় শিক্ষার্থী, কৃষক, ব্যবসায়ী, অসুস্থ রোগীসহ সাধারণ মানুষকে। তাই জরুরি প্রয়োজনে জেলা কিংবা উপজেলা সদরে যেতে হয় প্রায় ২৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার পথ ঘুরে।

এমন ভোগান্তি দূর করতে কুমার নদের ওপর ২৮০ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ হচ্ছে। কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। মার্চেই ব্রিজটি উদ্বোধনের কথা রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় ৩১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা বরাদ্দে কয়েকবছর আগে রাজৈর উপজেলার কবিরাজপুর জিসি সড়কে কুমার নদের ওপর ২৮০ মিটার পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ কাজ সমাপ্তির পথে। চলছে ২০০ মিটার আরই ওয়াল ও সংযোগ রাস্তার কাজ। কাজটি বাস্তবায়ন করছে মাদারীপুর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

ব্রিজটি নির্মাণের ফলে মাদারীপুর সদর উপজেলার শ্রীনদী, শিরখাড়া, রাজৈর উপজেলার কবিারজপুর, হরিদাসদী-মহেন্দ্রদী, পাইকপাড়া ও শিবচর উপজেলার একটি অংশের ৩ লক্ষাধিক জনসাধারণ জেলা শহরে যাতায়াতের সুবিধা পাবেন।

ব্রিজটি ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের রাজৈর উপজেলার সানেরপাড় থেকে শ্রীনদী ভায়া মালিগ্রাম ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে সংযোগ। এতে কোটালীপাড়া, রাজৈর ও মাদারীপুর সদর উপজেলার একটি বড় অংশ ভাঙ্গা না ঘুরে অল্প সময়ে এ সংযোগ সড়ক দিয়ে কুমার নদের ওপর নির্মিত সেতু পার হয়ে সরাসরি মালিগ্রাম দিয়ে পদ্মা সেতুতে যাওয়া যাবে। এতে পথের দূরত্ব কমবে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার, সাশ্রয় হবে সময় ও অর্থ।

এছাড়া সেতুটি দিয়ে সহজে কৃষকের উৎপাদিত ফসলাদি ও পণ্য পরিবহন, দীর্ঘদিনের শিক্ষার্থীর দুর্ভোগ লাগব হবে, উন্নত হবে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সঙ্গে জেলা সদরের যাতায়াত ব্যবস্থা। আর এতে পাল্টে যাবে ব্রিজের দুপাশের মানুষের জীবনযাত্রার মান। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে জাতীয় অর্থনীতিতে।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুর রহিম ব্যাপারী বলেন, সেতুটি চালু হলে জেলার শহরের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত সড়ক যোগাযোগ সম্ভব হবে।

নিলখি ইউনিয়নের বাসিন্দা শিক্ষক আবদুস সালাম মিয়া বলেন, ‘দীর্ঘদিন এলাকার মানুষ অনেক কষ্ট করে নদী পার হতো। এই কুমার নদের এপার-ওপারের জনগণের মধ্য সামাজিক অনেক দূরত্ব ছিল। আগে সামান্য বৃষ্টি হলেই নদী পারাপার বন্ধ হয়ে যেত। এখন আশপাশের তিনটি উপজেলার মানুষ সহজভাবে নদী পার হয়ে জেলা শহরের যাতায়াত করতে পারবে।’

কামারকান্দি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছালমা আক্তার রিমা বলে, ‘সেতু হওয়ায় এলাকার ছাত্র-ছাত্রীরা ঠিক সময়ে স্কুলে যেতে পারবে।’

ইশিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মোল্লা জাগো নিউজকে বলেন, ‘ব্রিজটি হওয়ায় অত্র এলাকার মানুষের আত্ম-কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এতে তাদের ভাগ্যের ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটবে।’

মাদারীপুরের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী বাবুল আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, মাদারীপুর সদর উপজেলার শ্রীনদী জিসি থেকে কবিরাজপুর জিসি সড়কে কুমার নদের ওপর দীর্ঘ সেতু নির্মাণ হওয়ায় পাল্টে যাবে প্রত্যন্ত জনপদের দৃশ্যপট। ১৮ কিলোমিটার দূরত্ব কমবে। কৃষক পাবে তার ফসলের ন্যায্য মূল্য, ভোগান্তি কমবে শিক্ষার্থীদের। প্রসার ঘটবে ব্যবসা-বাণিজ্যে। উন্নত হবে মানুষের জীবন যাত্রার মান। আগামী মাসের মধ্যে সেতুটি যাতায়াতের জন্য প্রস্তত হবে।

এ কে এম নাসিরুল হক/এসজে/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।