শত্রুতার বিষে নষ্ট ৮ একর তরমুজ, ক্ষতি ২০ লাখ টাকা
শত্রুতার জেরে ক্ষতিকর কীটনাশক স্প্রে করে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় বাবুল তালুকদার নামের এক কৃষকের আট একর জমির তরমুজ ক্ষেত নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তরমুজ ও গাছে পচন ধরেছে। এতে ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগী কৃষক।
ক্ষতিকর কীটনাশক স্প্রে করার পাশাপাশি ক্ষেতে পানি দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত একটি মোটর, দুটি জেনারেটর ও তিনটি স্প্রে মেশিন নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
এ ঘটনায় মেহেন্দিগঞ্জ থানা ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অফিসে লিখিত অভিযোগ করেছেন কৃষক বাবুল তালুকদার।
বাবুল তালুকদার উপজেলার আলিমাবাদ ইউনিয়নের মাঝকাজী গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে।
অভিযোগ পেয়ে মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. কায়সার উদ্দিন সরেজমিন ক্ষতিগ্রস্ত তরমুজ ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পার্শ্ববর্তী শ্রীপুর ইউনিয়নের কয়েকজন বাসিন্দার কাছ থেকে মেয়ারচর ও বগিরচরের ১৫ একর জমি বর্গা নিয়ে তরমুজ চাষ করেন কৃষক বাবুল তালুকদার। তিনি ৫০ হাজার টাকা দিয়ে এক বছরের জন্য ওই জমি বর্গা নিয়েছেন। এতে তার অংশীদার ছিলেন মো. সুমন। তবে সুমনের বিরুদ্ধে এলাকার মানুষের গরু ও ছাগল চুরির অভিযোগ উঠলে তিনি তাকে অংশীদারত্ব থেকে বাদ দেন। এতে ক্ষিপ্ত হন সুমন।

ওই ঘটনার জের ধরে শুক্রবার (১১ মার্চ) রাতে সুমন, তার ছোট ভাই শিবলু ও ইব্রাহিম লবণের সঙ্গে ক্ষতিকর কীটনাশক মিশিয়ে তরমুজ ক্ষেতে স্প্রে করেন। এছাড়া ক্ষেতে পানি দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত একটি মোটর, দুটি জেনারেটর ও তিনটি স্প্রে মেশিন নিয়ে যান তারা। পরদিন চুরি করা মোটর, জেনারেটর ও স্প্রে মেশিন ভোলার ভেদুরিয়ার টেকেরেহাট এলাকায় বিক্রির জন্য তারা নিয়ে যান। সেখানকার মানুষের সন্দেহ হলে তাদের ধরে ফেলেন। কিন্তু পরে তারা কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে আসেন। ঘটনার পর থেকেই তারা আত্মগোপন করেছেন।
ভুক্তভোগী কৃষক বাবুল তালুকদার জাগো নিউজকে বলেন, ধারদেনা করে তরমুজ চাষ করেছিলাম। কিন্ত ফলন পাওয়ার আগেই আমার আট একরের তরমুজ ক্ষেত নষ্ট করে দেওয়া হলো। আমি এখন পথে বসে গেছি।’

এদিকে ঘটনার পর অভিযুক্ত মো. সুমন আত্মগোপন করেছেন। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে। এ কারণে অভিযোগ প্রসঙ্গে তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. কায়সার উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত তরমুজ ক্ষেত সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়েছে। সেখানে গিয়ে দেখা যায় ক্ষতিকর কীটনাশক স্প্রে করার কারণে আট একর তরমুজ ক্ষেত প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে। পাতা ও তরমুজে পচন ধরেছে। বাকি সাত একরেও স্প্রে করা হয়েছে। তবে সেগুলোর কম ক্ষতি হয়েছে। কৃষক বাবুল তালুকদারকে কম ক্ষতি হওয়া গাছগুলো রক্ষায় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে মেহেন্দিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনা তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সাইফ আমীন/এসআর/এএসএম