হাকালুকিতে অবাধে চলছে পাখি শিকার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মৌলভীবাজার
প্রকাশিত: ০৫:৩১ পিএম, ২৭ মার্চ ২০২২

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে বিষটোপ আর ফাঁদ পেতে হাকালুকি হাওরে অবাধে চলছে পাখি শিকার। সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলার ছয়টি উপজেলায় এশিয়ার সর্ববৃহৎ এ হাওরের অবস্থান।

শীতপ্রধান দেশ থেকে একটু উষ্ণতার জন্য শীত মৌসুমে এখানে আসে পরিযায়ী পাখিরা। তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা চলে যেতে শুরু করে। এসময় পরিযায়ীরা দিকবিদিক ঘোরাফেরা করে। এই সুযোগে অসাধু শিকারিরা শেষবারের মতো নেমে পড়ে পাখি শিকারে।

স্থানীয় পরিবেশবাদী ও পাখিপ্রেমীরা পাখি শিকার বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন।

প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন শীতপ্রধান দেশ থেকে হাকালুকি হাওরে নানা প্রজাতির পাখি আসে। এসবের মধ্যে রয়েছে বালিহাঁস, ভুতিহাঁস, ল্যাঞ্জাহাঁস, সরালি, কালিমসহ নানা প্রজাতির পাখি। পরিযায়ী পাখির পাশাপাশি দেশীয় প্রজাতির অনেক পাখিও রয়েছে হাকালুকি হাওরে।

হাওর পাড়ের বসবাসকারী স্থানীয়রা জানান, হাকালুকি হাওরে অসাধু শিকারিরা বিষটোপ আর ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করায় দিন দিন অতিথি পাখির আগমন কমে যাচ্ছে। বিশেষ করে শীতে হাওরে অতিথি পাখি আসার সঙ্গে সঙ্গে পাখি শিকারিরা তৎপর হয়ে ওঠে।

পরিবেশকর্মী খোরশেদ আলম জাগো নিউজকে বলেন, নাগুয়া হাওরখাল, মাইছলা, গজুয়া, পিংলা ও বাইয়াবিলে শিকারিদের উৎপাত বেশি থাকে। পাখি শিকারিরা রাত-দিন নানাভাবে ফাঁদ পেতে, বন্দুক ও জাল দিয়ে হাওরে পাখি শিকার করছে। এছাড়া বিষটোপ দিয়ে পাখি মারা হচ্ছে। বিষটোপ খেয়ে পাখির পাশাপাশি অনেক খামারির হাঁসও মারা যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি বাড়ানোর প্রয়োজন।

হাকালুকিতে অবাধে চলছে পাখি শিকার

নাগুয়া বিলের পাশের চাষি মো. শামীম মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাখিগুলো ফিরে যাওয়ার সময়ও পাখি শিকার চলছে অবাধে। শিকার বন্ধে নিজ থেকে পাহারা দেই। এরপরও শিকারিরা পাখি শিকার করছে নানাভাবে ফাঁদ পেতে। শিকারিদের দেওয়া বিষটোপে অনেক সময় আমাদের গৃহপালিত হাঁস মারা যায়। বাধা দিলে তারা আমাদের হুমকি দেয়।

পরিবেশকর্মী ইকবাল জাগো নিউজকে বলেন, অবাধে পাখি শিকার হচ্ছে। এদের রক্ষায় জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। পাখি শিকার বন্ধে বনবিভাগের লোকবল সংকট রয়েছে। অবিলম্বে বনবিভাগের লোকবল সংকট নিরসন করে শিকার রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

পাখি শিকারের বিষয়টি স্বীকার করে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের জুড়ী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন, লোকবল সংকটে অনেক সময় পাখি শিকারিদের ধরতে আমাদের বেগ পেতে হয়। তবে এ বিষয়ে আমরা তৎপর আছি।

বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সিলেটের বিভাগীয় প্রধান রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, পাখি শিকার বন্ধে আমাদের প্রধান অন্তরায় লোকবল সংকট। মাঝেমধ্যে আমরা বন্দুক দিয়ে পাখি শিকারের খবর পাই। এ বিষয়ে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি। এরপর যদি কেউ পাখি শিকার করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আব্দুল আজিজ/এমআরআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।