ঈদের জামাতের জন্য প্রস্তুত এশিয়ার সবচেয়ে বড় ঈদগাহ ময়দান

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি দিনাজপুর
প্রকাশিত: ১০:০৪ পিএম, ০২ মে ২০২২

দেশের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাতের জন্য প্রস্তুত এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ ময়দান দিনাজপুর গোর-এ শহীদ কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠ। মিনার সংস্কার, রঙ করা, ধোয়ামোছা, মাঠে মাটি ভরাটসহ আনুষঙ্গিক সব কাজ শেষ হয়েছে।

সবচেয়ে বড় ঈদ জামাতকে কেন্দ্র করে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঈদের নামাজে আসা মুসল্লিদের নিরাপত্তায় তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন।

এরই মধ্যে মাঠে বসানো হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। মাঠের আরেকটি অংশে ঘের দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে যানবাহন রাখার গ্যারেজ। এ ছাড়া পাশের স্টেশন ক্লাব, সার্কিট হাউজ, শিশু একাডেমি ও জেলা গণ-গ্রন্থাগারেও যানবাহন রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মিনারে জ্বলছে লাল-নীল ঝাড়বাতি।

jagonews24

প্রবেশের জন্য মাঠের চার পাশে তৈরি করা হয়েছে তোরণ। শহরের প্রবেশ মুখগুলোতে এবং মিনারে যাওয়ার রাস্তাতেও তৈরি করা হয়েছে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তোরণ। মুসল্লিদের জন্য মাঠে ওজুখানা, ভ্রাম্যমাণ টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিদ্যুতের পাশাপাশি থাকবে জেনারেটর।

দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের নামাজে ইমামতি করবেন দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতাল জামে মসজিদের খতিব মাওলানা শামসুল হক কাসেমী। সকাল ৯টায় জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

jagonews24

মাঠে জেলা প্রশাসন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের পাশাপাশ জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিমের পক্ষে সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে থাকা ১২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর রমজান আলী জানান, গত ২০ দিন ধরে মিনারের সংস্কার ও মাঠের পরিচর্যার কাজ করা হয়েছে।

দিনাজপুর পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন জানান, গোর-এ শহীদ বড় ময়দানে ঈদের জামাতকে ঘিরে কড়া নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। ঈদগাহের চারপাশে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে মুসল্লিদের তল্লাশির ব্যবস্থা থাকবে। মাঠের নিরাপত্তার জন্য নির্মিত হয়েছে পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। বসানো হয়েছে সিসি ক্যামরা। শহরজুড়ে ট্রাফিক ব্যবস্থা থাকবে।

দিনাজপুরের গোরে শহীদ ময়দানটি দুই বিভক্ত। মাঝখান দিয়ে পাকা রাস্তা। দুটি ময়দানে জমির পরিমাণ সাড়ে ২২ একর। এর মধ্যে উত্তর অংশটি সাড়ে ১৪ একর। সেই সাড়ে ১৪ একরের ময়দানেই নির্মাণ করা হয়েছে এশিয়ার সবচেয়ে বড় ঈদগাহ মিনার। সেই ঈদের সবচেয়ে বড় ঈদের নামাজের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়।

jagonews24

এই ময়দানে দুই শতাধিক কাতার হবে বলে জানিয়েছে আয়োজক কমিটি। প্রতিটি কাতারে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। এই হিসাবে ময়দানে ২ লাখ ৪০ হাজার থেকে ২ লাখ ৬০ হাজার মানুষ ধরে। এবার স্থানীয় সংসদ ও জাতীয় সংসদের হুইপ জানিয়েছে দক্ষিণ পাশের মাঠে ও রাস্তার উপরেও মানুষ ঈদের নামাজ আদায় করবেন। তাতে করে ৬ লাখ মানুষের এবার ঈদের নামাজ আদায় করার সম্ভাবনা রয়েছে।

অন্যদিকে শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠটি সাড়ে ৭ একর। শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুস সালাম গোলাপ বলেন, ময়দানে ২৬৫টি সারি হয়। প্রতিটি সারিতে প্রায় ৫০০ করে মুসল্লি দাঁড়াতে পারেন। সব মিলিয়ে শুধু মাঠের ভেতরেই প্রায় ১ লাখ ৩২ হাজার ৫০০ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন।

jagonews24

তিনি বলেন, এছাড়া মাঠের আশপাশের বিভিন্ন খালি জায়গায় মুসল্লিরা নামাজ আদায় করেন। মাঠের সমপরিমাণ মুসল্লি নামাজ আদায় করেন মাঠের পাশের সড়ক ও খোলা জায়গায়।

মাঠের পাশ দিয়ে যে রাস্তা রয়েছে, সে রাস্তায়ও প্রায় এক থেকে দেড় কিলোমিটার পর্যন্ত জামাত ছড়িয়ে যায়। সব মিলিয়ে এই ময়দানে প্রায় তিন লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করে থাকেন।

এমদাদুল হক মিলন/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।