ক্রেতা আসছেন দেখছেন তবে কিনছেন না

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি হবিগঞ্জ
প্রকাশিত: ০২:০৩ পিএম, ০৭ জুলাই ২০২২

হবিগঞ্জে এখনও পুরোদমে জমে ওঠেনি কোরবানির পশুর হাট। ক্রেতাদের অভিযোগ দাম চাওয়া হচ্ছে বেশি, তাই ক্রেতারা কিনছেন না। এবার বাজারে প্রচুর পশু উঠলেও বেচাকেনা হচ্ছে একেবারেই কম। ক্রেতারা বাজারে আসছেন, দেখছেন আর চলে যাচ্ছেন।

সদর উপজেলার চানপুর গ্রামের ইউপি সদস্য তৌহিদ মিয়া বলেন, মানুষ আসছেন দেখছেন। ক্রেতারা ভাবছেন দাম অনেক বেশি। আসলে পশুর দাম ঠিকই আছে। খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় একটু বেশি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা ন্যায্যমূল্য পাই না। মানুষ দাম বেশি বলে ঘুরে যাচ্ছেন। এখনও কেনাবেচা জমে ওঠেনি।

jagonews24

বানিয়াচং উপজেলার আতুকুড়া গ্রামের জব্বার মিয়া জানান, এখনও পশু তেমন কেনাবেচা হচ্ছে না। মানুষ আসছেন দাম করছেন এরপর চলে যাচ্ছেন। তবে শেষ মুহূর্তে কেনাবেচা জমে উঠবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নুরপুর ইউনিয়নের খামারি ইছাক আলী সেবন জানান, তিনি শখের বশে নিজের বাড়িতে ২০১৭ সাল থেকে গরুর খামার শুরু করেন। এখন তার খামারে রয়েছে উন্নত জাতের ষাঁড় ও কয়েকটি গাভী। কোরবানির ঈদের জন্য ৬টি বিদেশি জাতের ষাঁড় রয়েছে তার খামারে। গরুগুলোর দাম ২ থেকে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত চাচ্ছেন তিনি। দানাদার খাদ্যের মূল্য বাড়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন বলেও জানান তিনি।

বাণিজ্যিক এলাকার বাসিন্দা ক্রেতা হারুন মিয়া বলেন, গরুর দাম এ বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় একটু বেশি মনে হচ্ছে। আমি দু’টি গরু দাম করেছি। বিক্রেতারা বলেছে ৮ লাখ ৮০ হাজার। কিন্তু আমার ধারণা গরু দুটি ৫ লাখ টাকা হবে।

jagonews24

হবিগঞ্জ গরুর হাটের ইজারাদার প্রতিনিধি ছালেক মিয়া বলেন, বেচাকেনা মোটামুটি ভালো হচ্ছে। কিন্তু আশপাশে ছোটখাট অবৈধ বাজার হওয়ার কারণে এবং আমরা অতিরিক্ত মূল্যে এ বাজার ইজারা নেওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।

চৌধুরী বাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোর্শেদ মিয়া বলেন, গরুর বাজারে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মানুষ যাতে নিরাপদে গরু কিনে নিয়ে যেতে পারে সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. প্রকাশ রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, এ বছর খাবারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই খরচ বেড়েছে। বন্যা পরিস্থিতির কারণেও খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাই এ বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় গরুর দাম একটু বেশি হওয়া উচিৎ। অন্যথায় তাদের পোষাবেনা। জেলায় উৎপাদিত গরু এবং চাহিদা প্রায় কাছাকাছি রয়েছে।

jagonews24

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলায় স্থায়ী, অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় ৪০টি কোরবানির পশুর হাট বসেছে। বন্যা না হলে আরও বেশি হতো। গত বছর হাট বসেছিল ৪৩টি। খামার রয়েছে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ৫ হাজার। এসব খামারে গরু উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার। ছাগল ও ভেড়া উৎপাদন হয়েছে ২৫ হাজার। আর কৃষক পর্যায়ে কোরবানির জন্য লালন পালন করা হয়েছে ২০ হাজার গরু। কিন্তু জেলায় চাহিদা রয়েছে ৯০ হাজার পশুর। বাকি ১০ হাজার পশু জেলার বাইরে থেকে এনে চাহিদা পূরণ হবে

সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।