মিরসরাইয়ে কসাই পেতে হিমশিম
![মিরসরাইয়ে কসাই পেতে হিমশিম](https://cdn.jagonews24.com/media/imgAllNew/BG/2019November/mir-20220709213022.jpg)
তিনদিন ধরে কসাই খুঁজছেন চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার দুর্গাপুর এলাকার চাকরিজীবী মহসিন মিয়া। কিন্তু কোথাও পাচ্ছিলেন না। সবার নাকি চুক্তি হয়ে গেছে। ‘অতিথি কসাই’ খুঁজে দেখেন বলতেই জবাব এলো, ‘ভাই, অতিথি কসাই-জাত কসাই সব খুঁজছি, পাওয়া যাচ্ছে না। সবাই বলছেন, তাদের কাজের চুক্তি হয়ে গেছে।’
যারা সচরাচর কসাইয়ের কাজ করেন না, শুধু কোরবানির ঈদের দিনই গরু জবাই থেকে শুরু করে কাটাকাটির কাজটি করে দেন, তাদেরই অনেকে ‘অতিথি কসাই’ বলে ডাকেন। এদের অনেকে মিরসরাইয়ের বাইরে থেকেও আসেন।
অন্য সময় যাই হোক না কেন, কোরবানির ঈদ এলেই চাহিদা বেড়ে যায় কসাইদের। পেশাদার কসাইয়ের পাশাপাশি একদিনের জন্য অনেকে ‘অতিথি কসাই’ বনে যান। তাদের পেতেও এবার হিমশিম খেতে হচ্ছে মিরসরাইবাসীকে। বিশেষ করে অনেকে কোরবানি দেন যাদের স্বামী প্রবাসে থাকেন। বাড়িতে কাজ করার কেউ থাকেন না। তাদের প্রয়োজন হয় ‘অতিথি কসাইয়ের’।
উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন দুই পৌরসভার প্রায় সবকটি বাড়িতে কোরবানিকে ঘিরে অতিথি কসাইয়ের বেশ কদর রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পেশাদার কসাইরা গরুর দামের ওপর ভিত্তি করে জবাই ও মাংস কাটার জন্য টাকা নেন। তবে অতিথি কসাইরা এ বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমেই ঠিক করেন।
ওয়াহেদপুরের নাইমুল গতবছর ১ লাখ ১০ হাজার টাকার গরুর জন্য কসাইকে ১২ হাজার টাকা দিয়েছেন। এবার তারা আরও বেশি চাওয়ায় ‘অতিথি কসাই’ ঠিক করেন তিনি।
বারইয়ারহাটের দুই অতিথি কসাই মানিক ও ভোলা। মানিক বারইয়ারহাট একটি মৎস্য আড়তে কাজ করেন। ভোলা কাজ করেন ফার্নিচারের একটি দোকানে।
মানিক জাগো নিউজকে বলেন, ‘দুইদিনে (ঈদের দিন ও পরদিন) প্রায় ৮টি গরু বানাতে পারি। এতে বেশ আয় হয়।’
গত ৬ বছর ধরে কোরবানির ঈদে গরু কাটার কাজ করছেন মাসিক ও ভোলা। মানিক বলেন, প্রথম প্রথম অনেক চামড়া নষ্ট করেছি, কিন্তু এখন আর হয় না। এখন অভিজ্ঞ হয়ে গেছি।
এদিকে অতিথি কসাই যেখানে বাড়তি আয় নিয়ে খুশি পেশাদার কসাইদের দুশ্চিন্তা সেখানে কাজের চাপ নিয়ে। বড়দারোগাহাটের ইসহাক, জসিম কসাই জানান, তাদের প্রতিজনের দিনে ৮-১০টি গরু জবাই করে কেটে দেওয়ার সামর্থ্য থাকলেও কাজ নিয়েছেন বেশি।
‘গুনে দেখেছি, ১৩-১৪ জনকে কথা দিয়েছি গরু বানিয়ে দেবো বলে। অতিরিক্ত একটি দল বানিয়ে বাকি কাজ করতে হবে আর কি,’ বলেন ইসহাক।
করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন জাগো নিউজকে বলেন, প্রতি বছর জোরারগঞ্জের মোস্তাক কসাই সাতজন লোক ঠিক দেন। আমি একটি গরু, একটি মহিষ ও কয়েকটি ছাগল কোরবানি দিয়ে থাকি। তাদের জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা করে দিতে হয়। চামড়াও তারা নিয়ে যান। কসাই থাকলে টেনশনমুক্ত। কাজও দ্রুত শেষ হয়।
এসআর/জেআইএম