ব্রহ্মপুত্রে নাব্য সংকট: বালাসী-বাহাদুরাবাদ রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি গাইবান্ধা
প্রকাশিত: ০৭:১৯ পিএম, ১৭ জুলাই ২০২২
লঞ্চ বন্ধ থাকায় ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় যাতায়াত করছেন যাত্রীরা

ব্রহ্মপুত্রে নাব্য সংকটের কারণে বালাসী-বাহাদুরাবাদ রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

জানা যায়, মহাসড়কের বিড়ম্বনা এড়াতে কয়েকমাস আগে গাইবান্ধার বালাসী থেকে জামালপুরের বাহাদুরাবাদ নৌরুটে চারটি লঞ্চ চলাচল শুরু হয়। এতে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে যাতায়াত কিছুটা সহজ হয়েছিল। নাব্য সংকটে ঈদের পর থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফিরতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

সূত্র জানায়, গত ৮ মার্চ ব্রহ্মপুত্র নদের গাইবান্ধার বালাসী-জামালপুরের বাহাদুরাবাদ রুটে এমভি মোহাব্বত ও রিভারস্টার নামে দুটি লঞ্চ সার্ভিসের উদ্বোধন করেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। এরপর যাত্রীদের সুবিধার্থে এ নৌরুটে নতুন করে সুরেশ্বর ১ ও সুরেশ্বর ৫ নামে আরও দুটি লঞ্চ চালু করে গাইবান্ধা লঞ্চ মালিক সমিতি। কিন্তু ব্রহ্মপুত্রের নাব্য সংকটে প্রায়ই লঞ্চ বালুতে আটকে যাচ্ছে। ফলে চারটি লঞ্চ বন্ধ রয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা মানুষ। বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাদাগাদি করে নৌকায় পার হচ্ছেন তারা।

jagonews24

মনির উদ্দিন নামে এক যাত্রী বলেন, ‘ঈদে সড়কপথে যানজট আর সময় বাঁচাতে বালাসী-বাহাদুরাবাদ ঘাট হয়ে কর্মস্থল ঢাকায় যাচ্ছিলাম।কিন্তু এখানে এসে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। ভেবেছিলাম লঞ্চ চালু হওয়ায় যাতায়াতের কষ্ট কমবে, এখন তো দেখি ভোগান্তি বাড়ছে। কবে লঞ্চ সার্ভিস চালু হবে কে জানে?’

শাকিল মিয়া নামের আরেক যাত্রী বলেন, ‘লঞ্চের এমন বিড়ম্বনা শিকার হতে হবে আগে জানা ছিল না। কয়েকদিন পরপরই মাঝনদীতে লঞ্চ আটকে যাচ্ছে। এখন পরিবার নিয়ে রোদের মধ্যে নৌকা দিয়ে পারাপার খুবই কষ্টকর।’

বাশার নামের এক যাত্রী বলেন, ‘আগে সহজেই আমরা গাইবান্ধা শহরে আসতে পারতাম। কিন্তু নদীর পানি কমে যাওয়ায় যাতায়াত করতে কষ্ট হচ্ছে।’

jagonews24

গাইবান্ধা লঞ্চ মালিক সমিতির ম্যানেজার মুকুল মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘বালাসী-বাহাদুরাবাদ নৌরুটে চারটি লঞ্চ সার্ভিস চালু হয়। নদীর নাব্য সংকটে ঈদের একদিন পর থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। ঈদে যাত্রীর ব্যাপক চাপ। তাই বিকল্প হিসেবে নৌকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নদীতে পানি কমায় ডুবোচরে লঞ্চগুলো আটকে যায়।

তিনি আরও বলেন, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীর তলদেশে অল্প সময়ের মধ্যেই নাব্য সংকট দেখা দেয়। এ রুটে ড্রেজারের ব্যবস্থা করলে যাত্রীরা নিয়মিতভাবে চলাচল করতে পারবে।

jagonews24

২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে একনেকের সভায় নৌরুটটি ফেরিঘাট নির্মাণের প্রকল্প অনুমোদন দিয়ে প্রথমে ১২৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। পরে দুবার সংশোধন করে প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে ১৪৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা খরচে পুলিশ ব্যারাক, ফায়ার সার্ভিস, টার্মিনাল, টোল আদায় বুথসহ বেশ কিছু স্থাপনা নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএর কারিগরি কমিটি নাব্য সংকটসহ ২৬ কিলোমিটার দূরত্বের নৌপথে নানা সমস্যার কথা তুলে ধরে নৌরুটটি চলাচলে অনুপযোগী বলে প্রতিবেদন দেয়।

এসজে/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।