বিশ্ব রেকর্ড গড়া হলো না ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্যের

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি সুনামগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৬:৪৪ পিএম, ৩০ আগস্ট ২০২২

২৮১ কিলোমিটার সাঁতরে বিশ্ব রেকর্ড করতে যাওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য ৮২ কিলোমিটার অতিক্রমের পর সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার হরিনাপাটি এলাকায় পৌঁছে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পরিশ্রান্ত এই সাঁতারুকে তার সঙ্গে থাকা চিকিৎসক দল মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

এর আগে দুপুর ২টায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য হরিনাপাটি এলাকায় পৌঁছালে তার শরীর সাদা হয়ে যায়। তাড়াতাড়ি তাকে অনুসরণকারী চিকিৎসক, স্বেচ্ছাসেবী ও পুলিশ সদস্যদের ট্রলারে তোলা হয়।

জানা যায়, সোমবার সকাল ৬টা ৩৪ মিনিটে সিলেট নগরীর সুরমা নদীর কিনব্রিজ পয়েন্ট সংলগ্ন চাঁদনিঘাট থেকে সাঁতার শুরু করেন ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য। ২৮১ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়ার মিশনে নামেন তিনি। কিন্তু বৃষ্টিপাত ও ঠান্ডা পানিতে ৮২ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করার পর সুনামগঞ্জের হরিনাপাটি এলাকায় হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।

সিলেট মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের আহ্বায়ক মনোজ কাপালি মিন্টু বলেন, সোমবার রাত ও মঙ্গলবার সকালে বৃষ্টি হওয়ায় পানি অত্যন্ত ঠান্ডা ছিল। অতিরিক্ত ঠান্ডা পানির কারণে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। উনি সাঁতার সম্পন্ন করতে না পারায় আমরা ব্যথিত হয়েছি।

যুব কমান্ড নেতা শেখ মোহাম্মদ আলম বললেন, জয় পরাজয় বড় কথা নয়, উনি যে এই বয়সে ২৮১ কিলোমিটার সাঁতারের সাহস করেছিলেন, তাতে আমাদের সাহস বেড়েছে।

এর আগে ২৮৫ কিলোমিটার সাঁতরে কিশোরগঞ্জের ভৈরব ফেরিঘাটে পৌঁছাতে প্রায় ৭০ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছিলেন ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য। সাঁতরে তার সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জ এই চার জেলা অতিক্রম করার কথা ছিল। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন, নৌ-পুলিশসহ সিভিল সার্জনের একাধিক টিম সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল। সাঁতারে সার্বিক সহযোগিতায় ছিল সিলেট জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।

সিলেট মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল বলেন, ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্রের শ্বাসকষ্ট বেড়েছে, শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমেছে, ঠান্ডায় নিউমোনিয়ার উপক্রম হয়েছে। সঙ্গে থাকা ডাক্তাররা তাকে সাঁতারে অনুমোদন দিচ্ছিলেন না। ডাক্তারের পরামর্শ অমান্য করেই সাঁতার চালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন তিনি। একসময় তিনি উঠে আসতে বাধ্য হন।

সঙ্গে থাকা চিকিৎসক দলের প্রধান তপোজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য পরিশ্রান্ত, তার শরীরে অক্সিজেন কমে যাচ্ছে। ঝুঁকি না নিয়ে অক্সিজেন দিয়ে তাকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে আনা হয়েছে।

একাধিক জাতীয় রেকর্ডের পর অবিরাম সাঁতারু হিসেবে বিশ্বরেকর্ড গড়তে নেমেছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য। তিনি ১৯৫২ সালের ২৩ মে নেত্রকোনার মদন উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সিলেটের এমসি কলেজ থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।

লিপসন আহমেদ/এমআরআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।