নির্মম পৃথিবীতে বড় একা ১৮ দিনের ইয়াসিন

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নীলফামারী
প্রকাশিত: ১০:২৭ এএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

নির্মম হত্যাকাণ্ডের স্বীকার মা-বোন। আর হত্যার দায়ে পুলিশের হেফাজতে বাবা। সব হারিয়ে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ১৮ দিন বয়সী ইয়াসিন। এ যেন কোনো সিনেমা বা নাটকের গল্পকেও হার মানায়। তবে এটা সিনেমা বা নাটক নয় নীলফামারীর ডোমারের ১৮ দিন বয়সী ইয়াসিনের গল্প।

ইয়াসিন ডোমার উপজেলার বোড়াগাড়ি নিমোজ খানা নয়ানি বাগডোগরার রত্না ও জিয়াউর দম্পতির ছেলে। বুধবার (৩১ আগস্ট) পারিবারিক কোলহের জেরে বাবা জিয়াউরের হাতে নির্মমভাবে খুন হন ইয়াসিনের মা রত্না বেগম ও তিন বছর বয়সী বোন ইয়াছমিন। ওই ঘটনায় ইয়াসিনের বাবা জিয়াউর নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেও বেঁচে যান। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। পুলিশ হেফাজতে তার চিকিৎসা চলছে। সুস্থ হলেই যেতে হবে কারাগারে। কিন্তু কী হবে ইয়াসিনের, কে নেবে তার দায়িত্ব।

jagonews24

ইয়াসিনের নানা আব্দুল করিম জানান, দীর্ঘ তিন বছরের বেশি সময় ধরে শ্বশুরবাড়িতেই ছিলেন রাজমিস্ত্রী জিয়াউর রহমান জিয়া। নেই তেমন কোনো সম্পদ বা সঞ্চিত কোনো অর্থ।

ইয়াসিনের নান-নানির অবস্থাও ভালো না। এ অবস্থায় নিষ্পাপ শিশুটির কোনো কিছুই ভাবতে পারছেন না তারা। মেয়ে ও নাতনিকে হারিয়ে ভাষা হারিয়েছেন তারাও। ঘটনার দিন আহত হয়ে হাসপাতালে আছেন ইয়াসিনের নানি বিলকিস বেগম। এমন ঘটনায় বাকরুদ্ধ গোটা পরিবার।

আব্দুল করিম বলেন, কী আর করার। মানসিকভাবে আমরা এখনো কুলিয়ে উঠতে পারিনি। ওরতো এখন কেউ নেই, আমরাই সব। ওর নানিও অসুস্থ। দেখা যাক কী হয়।

jagonews24

এদিকে নীলফামারী জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ডোমার উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে ইয়াসিনকে।

এ বিষয়ে ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রমিজ আলম বলেন, ১০ হাজার টাকা আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। ইয়াসিনের নানা-নানি আছেন। তারা যদি মনে করে কোনো সহযোগিতা প্রয়োজন, তারা যদি আমাদের কাছে আসেন তাহলে সহযোগিতা করা হবে।

অন্যদিকে ইয়াসিনের নানার করা মামলায় পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন জিয়াউর রহমান। তার বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। সুস্থ হলে তাকে কারাগারে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন ডোমার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদ উন নবী।

এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।