সিলেটে পরিবহন শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ, ভোগান্তি
![সিলেটে পরিবহন শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ, ভোগান্তি](https://cdn.jagonews24.com/media/imgAllNew/BG/2019November/sylhet-1-20220922220044.jpg)
হঠাৎ সিলেটের প্রবেশদ্বারসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো অবরোধ করেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। একারণে নগরজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজটের। শপিংমল ও বিপণীবিতান বন্ধ করে বাসায় ফিরতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ।
পরিবহন শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ৮টার দিকে এ বিক্ষোভ শুরু হয়। রাত ৯টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আন্দোলন চলছে।
নগরের ইউসেপ ঘাসিটুলা টেকনিক্যাল স্কুলের শিক্ষক শাহ আলম জাগো নিউজকে বলেন, জরুরি কাজে জিন্দাবাজার এসে দেখি সড়কে অবরোধ। হঠাৎ আন্দোলনের কারণে আটকা পড়েছি। এর ৮/৯ দিন আগেও পরিবহন শ্রমিকরা হঠাৎ ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করে। ওই সময়ও সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়েন। এভাবে কথায় কথায় সড়ক অবরোধ করায় সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
জানা গেছে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ সুরমা থানায় শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে মারধর ও টাকাপয়সা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে একটি মামলা করেন লেগুনা শ্রমিক মো. শাহাব উদ্দিন। এতে সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম, সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাকারিয়া আহমদ, হিউম্যান হুইলার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল মিয়া মইনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২০/৩৫ জনকে আসামি করা হয়।
এ মামলার প্রতিবাদে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই আন্দোলনে নেমেছেন শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৮টা থেকে যানবাহন বন্ধ রেখে নগরের বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন তারা। ফলে সন্ধ্যা থেকে দূরপাল্লার বাসসহ সিলেটে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। আচমকা এমন কর্মসূচিতে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। অনেকেই বাস কাউন্টারগুলোতে এসে বসে আছেন।
রাত ৮টায় নগরের শাহজালাল উপশহর, শাহী ঈদগাহ, বালুচর, টিলাগড়, হুমায়ন রশীদ চত্বর, জননেতা আব্দুস সামাদ আজাদ চত্বর, কিনব্রিজের মুখ, আম্বরখানা, চৌহাট্টাসহ বিভিন্ন মোড়ে পরিবহন শ্রমিকদের জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে আন্দোলন করছেন তারা। ফলে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ সূত্র জানা যায়- পরিবহন শ্রমিকদের দুটি গ্রুপ রয়েছে। এই দুই গ্রুপের বিরোধের জেরে থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। একটি মামলায় পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের আসামি করা হয়েছে।
মামলার আটদিন পর আন্দোলনে নামা প্রসঙ্গে সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম বলেন, মামলার বিষয়টি আমরা আজকেই জানতে পেরেছি। আজকে আমাদের কয়েকজন শ্রমিক পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে এ বিষয়ে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তিনি তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন।
ময়নুল বলেন, যিনি আমাদের নামে মামলা করেছেন তাকে আগেই শ্রমিক সমিতি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এই কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি আমাদের নামে চাঁদাবাজি-ছিনতাইয়ের অভিযোগে মিথ্যা মামলা করেন। পুলিশও কোনো তদন্ত ছাড়াই মামলাটি গ্রহণ করে। তাই আমরা শ্রমিক হয়রানিকারী সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনারের অপসারণ দাবি করছি।
তিনি আরও বলেন, মামলার বিষয়টি জানতে পেরে শ্রমিকরা আজ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। তারা বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে ও সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছে। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। পুলিশ কমিশনারের অপসারণ ও মামলা প্রত্যাহার না হলে আন্দোলন চলবে।
এ বিষয়ে দক্ষিণ সুরমা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন কুমার চৌধুরী বলেন, দুই গ্রুপ শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে থানায় দুটি পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। পুলিশ মামলাগুলো তদন্ত করছে। মামলা রুজুর আটদিন পর পরিবহন শ্রমিকদের আন্দোলন অযৌক্তিক। পুলিশ মামলা দুটি তদন্ত করলেও কাউকে আটক করেনি।
ছামির মাহমুদ/এমআরআর/জেআইএম