অটোরিকশার যত্রতত্র পার্কিংয়ে বেড়েছে যানজট, অতিষ্ঠ জনজীবন
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের প্রতিটি পয়েন্টে যানজট এখন নিত্যদিনের সঙ্গী। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না কেউই। ঠিক সময়ে স্কুল-কলেজ এমনকি মাদরাসায় যেতে পারছে না শিক্ষার্থীরা।
সড়কের দুপাশে ব্যাটারিচালিত ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার যত্রতত্র পার্কিংয়ের কারণেই এ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ পৌরবাসীর। এর জন্য পৌর কর্তৃপক্ষের দায়িত্বের অবহেলা ও তদারকির অভাবকে দায়ী করছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পৌর শহরের প্রাণ কেন্দ্র আলফাত স্কয়ার পয়েন্ট দিয়ে প্রতিদিন সুনামগঞ্জের লক্ষাধিকেরও বেশি মানুষ যাতায়াত করেন। কিন্তু এ পয়েন্টে সড়কের দুপাশ দখল করে অটোরিকশার পার্কিং গড়ে উঠেছে। শুধু আলফাত স্কয়ার পয়েন্ট নয়, শহরের গুরুত্বপূর্ণ কালীবাড়ি, খামারখালী, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, আদালত এলাকা, নতুন বাসস্ট্যান্ড, ওয়েজখালী, ডিএস রোড, উকিল পাড়া, কাজী, নবীনগর, মমিনুল মউজদীন রোড এমনকি হাসপাতালসহ ১৩ পয়েন্টে অটোরিকশার অবৈধ পার্কিং গড়ে ওঠায় প্রতিনিয়ত যানজট লাগছে।
শহর ঘুরে দেখা যায়, অটোরিকশার চালকরা ইচ্ছে মতো যেখানে খুশি সেখানে যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছেন আবার রাস্তার মধ্যেই গাড়ি থামিয়ে যাত্রীদের তুলছেন। এতে যেমন যানজট সৃষ্টি হচ্ছে, তেমনি ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনাও। শহরের কিছু পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশ থাকলেও যানজট নিরসনের মোকাবিলায় তাদেরও হিমশিম খেতে হচ্ছে।

জেলা ইজিবাইক মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের তথ্য মতে, পৌর শহরের সাড়ে ৬০০ অটোরিকশার লাইসেন্স দিয়ে চলাচল করলে বাস্তবে ভিন্ন রূপ। হাজারেরও বেশি অটোরিকশা চলাচল করছে বলে দাবি পৌরবাসীর।
সুনামগঞ্জের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, যানজটের কারণে নাজেহাল অবস্থা তাকে। গুরুত্বপূর্ণ কাজে রিকশা দিয়ে যে জায়গায় ৫ মিনিটে যাওয়ার কথা সেই জায়গায় পৌঁছাতে ২০ মিনিট লাগছে। ফলে অনেক সময় হেঁটেই গন্তব্যে যেতে হচ্ছে।
হাসননগর এলাকার বাসিন্দা আহমেদ সুমন বলেন, ‘যানজটের কারণে আমাদের অবস্থা নাজেহাল। আলফাত স্কয়ার থেকে কোর্ট এলাকায় যেতে ৫ মিনিটের রাস্তা ২০ মিনিট লেগে যায়। যানজট নিরসনে পৌর কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া উচিত।’

ডিএস রোডের কাপড় ব্যবসায়ী জুবায়ের আহমেদ বলেন, ‘দোকানের সামনে দাঁড় করিয়ে অটোরিকশায় যাত্রী তোলা হয়। কিছু বললে চালক উল্টো আমাদের গালাগালি করে। আসলে শহরের যানজটের বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষের আরও বেশি নজর দেওয়া উচিত।’
এ বিষয়ে জেলা ইজিবাইক মালিক শ্রমিক এক্য পরিষদের সভাপতি সুহেল আহমদ জাগো নিউজকে বলেন, পৌরসভার অনুমোদিত সাড়ে ৬০০ অটোরিকশা চলাচল করছে। লাইসেন্সবিহীন অনেক অটোরিকশা শহরের ঢুকে পড়লে যানজটের সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে আমরা লক্ষ্য রাখছি।
সুনামগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী কালী কৃষ্ণ পাল জাগো নিউজকে বলেন, সুনামগঞ্জে কোনো অটোরিকশার লাইসেন্স আমরা দিচ্ছি না। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন আমাদের সহযোগিতা করলে যারা অবৈধ পার্কিং গড়ে তুলেছে তাদের উচ্ছেদ করা হবে।
লিপসন আহমেদ/এসজে/জেআইএম