ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলায় মুগ্ধ মানুষ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি যশোর
প্রকাশিত: ০২:৩৬ এএম, ২৯ অক্টোবর ২০২২

খেলার শুরুতে বাদ্যের তালে তালে ঘোরে লাঠি। এরপর শুরু হয় লাঠিয়ালদের কেরামতি। শক্ত হাতে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করে ভেলকি দেখান তারা। লাঠিখেলার মধ্যে দুই লাঠি, চার লাঠি, শর্কি খেলা, তলোয়ার ও ছুরিসহ আরও অনেক খেলা রয়েছে। দুদলে বিভক্ত হয়ে এসব খেলা প্রদর্শন করেন লাঠিয়ালরা।

এরমধ্যে আবার একদল শিশুও ছিল। লাঠিখেলায় বড়দের শক্ত হাতের বিপরীতে ছোটরাও কোনোভাবে পিছিয়ে নেই সেটিই প্রমাণ দিয়েছে তারা।

শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে যশোর শহরের ঐতিহ্যবাহী টাউন হল মাঠে এই খেলা হয়। খেলা দেখে দর্শকরাও বেশ মজা পান।

যশোর ইনস্টিটিউটের প্রাণপুরুষ খ্যাত রায়বাহাদুর যদুনাথ মজুমদারের ১৬৪তম জন্মদিন উপলক্ষে লাঠিখেলার আয়োজন করে যশোর ইনস্টিটিউট।

প্রায় ঘণ্টাব্যাপী খেলা উপভোগ করতে মাঠের চারদিকে সমবেত হন হাজারো দর্শক। এতে কুষ্টিয়ার ‘বাংলাদেশ লাঠিয়াল’ বাহিনীর ৫০ সদস্যের একটি দল নৃত্যের তালে তালে নানা কসরত দেখায়। প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাত থেকে সুরক্ষা আর প্রতিপক্ষকে কাবু করতে মেতে ওঠেন তারা।

খেলায় অংশ নেওয়া সদস্যরা জানান, এই খেলায় জয়-পরাজয় মুখ্য নয়। দর্শকদের বিনোদন দেওয়াই মূল উদ্দেশ্য।

jagonews24

যশোরের সাংস্কৃতিক কর্মী প্রণব দাস বলেন, রায়বাহাদুর যদুনাথ মজুমদারের জন্মদিন উপলক্ষে প্রথমবারের মতো সপ্তাহব্যাপী স্মরণ উৎসব হচ্ছে। এ উৎসবে দেখলাম গ্রামীণ লাঠিখেলা। আমরা প্রতিবছর এমন খেলা দেখতে চাই।

তিনি জানান, দর্শকদের আগ্রহ আর ভালোবাসায় এখনো বেশ কিছু খেলোয়াড় এই ঐতিহ্য টিকিয়ে রেখেছেন। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী এই খেলা ধরে রাখতে খেলোয়াড়দের পাশাপাশি প্রশাসন ও আয়োজকদের উদ্যোগ নিতে হবে।

লাঠিখেলা দেখে আপ্লুত কলকাতা থেকে আসা রায়বাহাদুর যদুনাথ মজুমদারের কনিষ্ঠতম সদস্য কবি ও সাহিত্যিক ডা. গৌরব দীপ ভট্টাচার্য্য। তিনি বলেন, এই খেলা আমরা কিন্তু এখন দেখতে পাই না। বহুদিন আগে খেলাটি দেখেছি। সেটা আমার স্মৃতিতে নেই। আজ দেখে অনেক ভালো লাগলো।

লাঠি দলের দলনেতা মিজানুর রহমান জানান, তারা বিভিন্ন জায়গায় লাঠিখেলার প্রদর্শনী করেন। এ খেলার মাধ্যমে লোকদের যেমন আনন্দ দেন তেমনি নিজেরাও আনন্দ পান।

কিন্তু এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় গিয়ে লাঠিখেলার আয়োজন করা হলে তাদের অনেক লোকসান হয় বলে জানান তিনি।

তাই লাঠিখেলাকে জনপ্রিয় করে তুলতে সরকারি সহায়তার দাবি জানান মিজানুর রহমান।

এর আগে স্মরণ উৎসবটির উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টচার্য্য। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন যশোর ইনস্টিটিউটের পরিচালনা পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু।

জেডএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।