ঋণ মামলা

জামিন পেলেন ঈশ্বরদীর আরও ২৫ কৃষক

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি ঈশ্বরদী (পাবনা)
প্রকাশিত: ০৪:১৯ পিএম, ২৭ নভেম্বর ২০২২

ঋণের মামলায় পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার আরও ২৫ জন কৃষককে জামিন দিয়েছেন আদালত। ঋণের টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে তাদের জামিন দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক পাবনা শাখা থেকে ঋণ নিয়ে ফেরত না দেওয়ার অভিযোগে ঈশ্বরদী উপজেলার ভাড়ইমারী গ্রামের ৩৭ জন কৃষকের নামে মামলা করা হয়। এ মামলায় ১২ জন কৃষককে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওয়ারেন্টভুক্ত আরও ২৫ কৃষক গ্রেফতার এড়াতে তিনদিন বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছিলেন।

রোববার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে সাড়ে ১২টার দিকে ২৫ জন কৃষক পাবনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শামসুজ্জামানের আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করেন। পরে বিচারক তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।

এরআগে বেলা ১১টার দিকে গ্রেফতার ১২ কৃষকের জামিনের আদেশ দেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শামসুজ্জামান।

আইনজীবী তৌফিক ইমাম খান জামিনের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।

জামিনে মুক্ত হওয়ার পর ভাড়ইমারি গ্রামের কালাম প্রামাণিকের ছেলে মহির প্রামাণিক (৫০) জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি সমিতি থেকে কোনো ঋণ নিইনি। কোথাও আমার সইও নেই। কীভাবে আমাকে ঋণগ্রহীতা করা হয়েছে জানি না।’

jagonews24

তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টি ভালো বলতে পারবেন সবজি চাষি সমবায় সমিতির সভাপতি ও ইউপি সদস্য বিলকিস নাহার। তিনিই এ গ্রামের কৃষকদের এ ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন এ সমিতির গ্রুপ লিডার।’

ওমর প্রামাণিকের ছেলে কৃষক মুনসুর প্রামাণিক (৫৫) বলেন, ‘২০১৭ সালে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। পরে কিস্তিতে সমিতির লভ্যাংশসহ ৩৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেছি। এতদিন পর শুনছি এ টাকা পরিশোধ হয়নি। ১২ জনকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। গ্রেফতার আতঙ্কে আমিও তিনদিন পালিয়ে বেরিয়েছি। খুব আতঙ্কে ও ভয়ে ছিলাম।’

জানতে চাইলে সবজি চাষি সমবায় সমিতির সভাপতি ও ছলিমপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী সদস্য বিলকিস নাহার জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমিও এ মামলার আসামি ছিলাম। আমার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল। গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে ছিলাম।’

তিনি বলেন, ‘মোট ১৬ লাখ টাকা ঋণের বরাদ্দ ছিল। এ ঋণ ৩৭ জনের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। তবে কেউ কম, আবার কেউ বেশি করে নেন। সাতজন বাদে ঋণের টাকা অনেকেই পরিশোধ করেছেন। আবার কারও কারও ২-৫ হাজার বাকি আছে। তবে সাতজন কৃষক টাকা পরিশোধ করতে পারেননি। গ্রুপভিত্তিক ঋণের কারণে সবার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, কিস্তি যারা দিয়েছেন তাদের জমা রিসিভ দিয়েছি। যারা কিস্তি দেননি তারাও আমাকে অভিযুক্ত করার চেষ্টা করছেন।

কৃষকরা জামিনে মুক্ত হওয়ার পর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বাংলাদেশ কৃষক উন্নয়ন সোসাইটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ময়েজ বলেন, ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণের পর কৃষকরা ঋণ পরিশোধ করেছেন। তারপরও তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। তবে ৩৭ জন কৃষক জামিন পাওয়ায় তাদের পরিবার স্বস্তি পেয়েছে।

শেখ মহসীন/এসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।