সাড়ে ১২ লাখ টাকায় বিক্রি হলো ৮ ‘কালো পোপা’

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কক্সবাজার
প্রকাশিত: ০৯:২৪ এএম, ৩০ নভেম্বর ২০২২
আটটি কালো পোপা মাছে ভাগ্যবদল শহিদুল হকের পরিবারের

বঙ্গোপসাগরে এক জালে ধরা পড়ে আটটি বড় কালো পোপা মাছ (স্থানীয় ভাষায় কালো পোয়া)। কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ির বাসিন্দা শহিদুল হক বহাদ্দারের ফিশিং ট্রলারে মাছগুলো ধরা পড়ে। চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের কাছে ১২ লাখ ৮৩ হাজার টাকায় বিক্রি হয় আটটি মাছ।

শহিদুল হকের ভাই একে খান বলেন, বড় ভাইয়ের মালিকানাধীন এফবি মা-বাবার দোয়া ফিশিং ট্রলারে সোমবার দুপুরে ধরা পড়া আটটি কালো পোয়া মাছের দাম হাঁকা হয়েছিল ২৫ লাখ টাকা। স্থানীয় পাইকার কয়েকজন মিলে মাছগুলো ২১ লাখ ৫০ হাজার টাকা চেয়েছিলেন। চট্টগ্রামের পাইকাররা আরও বেশি মূল্য দেবে বলায় মাছগুলো সংরক্ষণ করে মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, ফিশারি ঘাটের ৪ নম্বর আড়তে গিয়ে পরীক্ষার পর জানা গেছে আটটি মাছের সাতটিই মেয়ে প্রজাতির। এতে পুরুষ প্রজাতির একটি পোয়া ১ লাখ ৭০ হাজার আর বাকি সাতটি ১১ লাখ ১৩ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। তবে মাছগুলো সব পুরুষ প্রজাতির হলে অর্ধ কোটি টাকা পাওয়া যেতো।

তার মতে, এখন পাওয়া দামেও বেজায় খুশি তাদের পরিবার ও মাঝিমাল্লারা। এলাকার ব্যবসায়ীরা যে মূল্য চেয়েছিলেন সেই দরে দিলে তারা ক্ষতির মুখে পড়তেন। এ সিজনের মতো খরচ পোষানে সম্ভব হয়েছে। আগের সিদ্ধান্ত মতো বিক্রির একটি অংশ মসজিদ-মাদরাসায় দান করা হবে।

ট্রলার মাঝি স্থানীয় আব্দুল মজিদ বলেন, মাতারবাড়ির জেলেপাড়ার শহিদুল হক বহদ্দারের ফিশিং বোট নিয়ে স্থানীয় জেলেরা সাগরে মাছ ধরতে গিয়েছিলাম। সোমবার সকালে বঙ্গোপসাগরের জাল ফেলি। দুপুরে যখন জাল তুলি, তখন বড়-ছোট মিলে ৪০ কেজি ওজনের কয়েকটি পোয়া মাছ ধরা পড়ে। এর মধ্যে বড় আটটি পোয়া মাছ নিয়ে আমরা মাতারবাড়ির কুলে ফিরে আসি। খবর পেয়েই স্থানীয় পাইকাররা মাছগুলো কিনতে জড়ো হন। চট্টগ্রামের মাছের আড়তের বড় ব্যবসায়ীরাও যোগাযোগ করেন।

মাতারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম হায়দার জাগো নিউজকে বলেন, অদৃশ্যের ভাগ্য কখন কীভাবে সুপ্রসন্ন হয় একমাত্র আল্লাহ জানেন। শহিদুল বহদ্দারের ভাগ্য খুলেছে। এক জালেই আল্লাহ তাকে ১২ লাখ টাকার সংস্থান করে দিয়েছেন। এর আগেও মাতারবাড়ির উপকূলে গত বছরে সৈয়দ বহাদ্দার ১৫টি এবং পরে আরও একটি পোয়া মাছ পেয়েছিলেন। যা বিক্রি করে ১৬ লাখ টাকা পেয়েছিলেন।

কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বদরুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, এ মাছের মূল আকর্ষণ পেটের ভেতরে থাকা পদনা বা বায়ুথলী (এয়ার ব্লাডার)। এই বায়ুথলী দিয়ে বিশেষ ধরনের সার্জিক্যাল সুতা তৈরি করা হয়। সার্জিক্যাল সুতা তৈরি করা যায় বলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ মাছের চাহিদা আছে। এ জন্য পোপা মাছের দাম চড়া পাওয়া যায়।

চলতি মাসের শুরুতে সেন্টমার্টিনে আবদুল গণি নামে এক জেলে পৃথক দুই সময়ে তিনটি পোপা মাছ পেয়েছেন। তা বিক্রি করে তিনি প্রায় ৯ লাখ টাকা পেয়েছেন। মাসের শেষ সময়ে এসে মাতারবাড়ির শহিদুল হক বহদ্দারের জালে একসঙ্গে আটটি বড় পোয়া মাছ ধরা পড়লো।

সায়ীদ আলমগীর/এসজে/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।