জমেনি সুনামগঞ্জের নতুন বর্ডার হাট, ভারতীয় ক্রেতা কম
বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ ব্যবস্থাপনায় ১২ মে সুনামগঞ্জের বোগলা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী বাগানবাড়ি এলাকায় চালু হয় বাগানবাড়ি রিংকু বর্ডার হাট।
দুই দেশের সীমান্তবর্তী পাঁচ কিলোমিটার অভ্যন্তরের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ এখানে কেনাকাটা করেন। একজন ক্রেতা সর্বমোট ২০০ ডলারের সমপরিমাণ টাকার কিনতে পারবেন। এই হাটে দুই দেশের সীমান্ত এলাকার লোকজন কৃষি, খাদ্য, হস্তশিল্পের পণ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কেনাবেচা করছে। সপ্তাহে একদিন বসা হাটটিতে প্রায় ১২ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি হয় বলে জানিয়েছে হাট কর্তৃপক্ষ।
সুনামগঞ্জ শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে দু’দেশের যৌথ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের বাগানবাড়ি ও ভারতের রিংকু এলাকার মধ্যবর্তী স্থানে সপ্তাহে একদিন (বৃহস্পতিবার) এই বর্ডার হাট বসে।

বাংলাদেশের ২৬টি ও ভারতের ২৪টি মিলিয়ে হাটে ৫০টি দোকান আছে। যে দোকানগুলোতে দুই দেশের স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত দ্রব্য, পান, সুপারি, সবজি, ফল, নানা জাতের মসলা, কাপড়, জুতা, প্রসাধনসামগ্রী বিক্রি করে ক্রেতারা।
সপ্তাহের একদিন বৃহস্পতিবার এই হাটে দুই দেশের ক্রেতা-বিক্রেতা ও উৎসাহী মানুষের ভিড় জমে। যা দুই দেশের মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয়। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় হাটটি যেতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষদের।
হাটে বসা ব্যবসায়ীরা বলেন, বর্ডার হাট চালু হওয়ায় আমরা খুশি। অনেকের কর্মসংস্থান হয়েছে। তবে ভারতীয় ক্রেতারা বাজারে কম আসায় বেচাকেনা কম হয়। এতে করে লাভের আশায় এসে লোকসান গুণতে হচ্ছে আমাদের।

হাটে বসা ব্যবসায়ী ওমর আলী জাগো নিউজকে বলেন, হাটে দোকান নিয়ে বসলেও ভারতীয় ক্রেতারা কম আসে। তার কারণ ওই দেশের বিএসএফ তাদের ডুকতে দেয়না। আর বাংলাদেশের সবাই ডুকে ভারতীয় পণ্য কিনে। অথচ বাংলাদেশের পণ্য বেশি চলে না।
আরেক ব্যবসায়ী সাদেক আলী জাগো নিউজকে বলেন, আমরা হাটে আমাদের উৎপাদিত সবজি নিয়ে আসলেও বিক্রি করতে পারি না। কারণ ভারতীয় ক্রেতারা আসেনা। আমরা চাই সরকার যেন এই দিকে দৃষ্টি বাড়ায়।
সপ্তাহে একদিন এই হাট থেকে ভারতীয় পণ্য কিনতে পারায় খুশি ক্রেতারা। তারা জানান, প্রতি বৃহস্পতিবারে এই হাটে আসি ভারতীয় পণ্য কিনার জন্য। যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় বর্ডার হাটে পণ্য নিয়ে আসতে কিংবা ভারতীয় পণ্য কিনে নিয়ে যেতে আমাদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
বাগানবাড়ি রিংকু বর্ডার হাট পরিচালনা কমিটির সভাপতি মিলন খান জাগো নিউজকে বলেন, সপ্তাহে একদিন এই হাটে ১২ লাখ টাকার বেচাকেনা হয়। একজন ক্রেতা ২০০ ডলার পর্যন্ত এখানে মালামাল কিনতে পারবেন। তবে ভারতীয় ক্রেতারা কম আসার বিষয়ে আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।
এদিকে বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে এ বর্ডার হাট পরিদর্শন করেছেন ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় বার্মা।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, সুনামগঞ্জ ৫ আসনের সাংসদ সদস্য মহিবুর রহমান মানিক, পুলিশ সুপার মো.এহসান শাহ প্রমুখ।
পরিদর্শন শেষে ভারতীয় হাই কমিশনার বলেন, আজকে এখানে এসে সত্যি খুব ভালো লাগছে। এই বর্ডার হাটগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশ আর ভারতের মানুষের মধ্যে আরও সুসম্পর্ক তৈরি হবে। এই হাটগুলোকে আমরা আরও উন্নত করব।
লিপসন আহমেদ/জেএস/জিকেএস