৫৩ শতাংশ দৃশ্যমান বঙ্গবন্ধু রেলসেতু

এম এ মালেক
এম এ মালেক এম এ মালেক , জেলা প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৪:২৩ পিএম, ১৬ জানুয়ারি ২০২৩

বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে নির্মিত হচ্ছে দেশের মেগা প্রকল্পের মধ্যে অন্যতম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইলে নদীর দু’প্রান্তে দেশি, বিদেশি প্রকৌশলী আর কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে চলছে এ সেতুর নির্মাণ কাজ। এরই মধ্যে সেতুটির ৫৩ শতাংশের বেশি কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

সেতুতে ক্রেনের সাহায্যে বসেছে ১০টি স্প্যান। দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর এক কিলোমিটারেরও বেশি অংশ। ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকের এ সেতুটি নির্মিত হবে মোট ৫০টি পিয়ারের ওপর। এটিই হবে দেশের দীর্ঘতম রেলসেতু।

যথাসময়ে কাজ শেষ করা গেলে এ সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হবে ২০২৪ সালে। তখন উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের যাতায়াত এবং পণ্য পরিবহনে আরও গতি আসবে।

রোববার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, এরই মধ্যে সেতুটির ৫৩ শতাংশের বেশি কাজ সম্পন্ন হয়েছে। স্টিল অবকাঠামোর এই সেতুতে ডাবল লাইন থাকবে। ট্রেন চলতে পারবে সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার গতিতে। নির্মাণ কাজ শেষ হলে এটিই হবে দেশের দীর্ঘতম রেলসেতু। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৫ লাখেরও বেশি টাকা।

৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটিতে ৫০টি পিয়ার এবং দু’টি পিয়ারের মাঝখানে একটি করে মোট ৪৯টি স্প্যান বসানো হবে। প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য গড়ে ১০০ মিটার। এরই মধ্যে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর প্রান্ত থেকে ৩৪ নম্বর থেকে ৫০ নম্বর মোট ১৭টি পিয়ার স্থাপন করা হয়েছে। বাকি ৩৩টি পিয়ারের মধ্যে বেশ কয়েকটি আংশিক স্থাপন করা হয়েছে। আর ৪০ নম্বর থেকে ৫০ নম্বর পিয়ার পর্যন্ত ১০টি স্প্যান বসানো হয়েছে। ৩৯-৪০ নম্বর পিয়ারে আরও একটি স্প্যান বসানোর কাজ চলছে।

সংশ্লিষ্টদের দাবি, সেতুটিতে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে তাতে আলাদাভাবে রং করার প্রয়োজন হবে না। এটি বেশ টেকসই। এর ফলে আগামী ১০০ বছরেও সেতুর কাঠামোয় কোনো মরিচা ধরবে না। এমনকি আবহাওয়া বদলের সঙ্গে সঙ্গে নিজ থেকেই বদলে যাবে গার্ডারের রং।

এর আগে রাজধানীর সঙ্গে উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনে বঙ্গবন্ধু সেতু। যমুনা নদীর ওপর স্থাপিত বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে এসব অঞ্চলের যানবাহন চলাচল করে। এরই এক পাশে এক লাইনের একটি রেললাইন রয়েছে। এটি দিয়ে ঘণ্টায় মাত্র ২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলে। এতে সেতুর দুই পাশে অন্য ট্রেন অপেক্ষা করতে হয়।

এ কারণে বাংলাদেশ রেলওয়ে সেতুর ৩০০ মিটার উজানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জকে যুক্ত করবে।

সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবু ইউসুফ সূর্য জাগো নিউজকে বলেন, রেল সেতুর মাধ্যমে যাত্রী সেবার মান বাড়ার পাশাপাশি ব্যবসা বাণিজ্যেরও প্রসার ঘটবে।

প্রকল্প পরিচালক মাসুদুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, এখন পর্যন্ত রেল সেতুর কাজের অগ্রগতি ৫৩ শতাংশ। ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত এ প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে। আশা করা যায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই রেল সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হবে।

তিনি বলেন, ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে এ রেল সেতুর নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। জাপান এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে রেল সেতু প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে জাইকা।

এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।