মেহেরপুর

কুয়াশা-শীতে নষ্ট হচ্ছে বোরো ধানের বীজতলা, বিপাকে কৃষক

আসিফ ইকবাল আসিফ ইকবাল মেহেরপুর
প্রকাশিত: ০৯:২৬ এএম, ২২ জানুয়ারি ২০২৩

ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে নষ্ট হচ্ছে মেহেরপুরের বিভিন্ন এলাকার বোরো ধানের বীজতলা। এতে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। তাদের শঙ্কা, বীজতলা নষ্ট হওয়ায় ব্যাহত হতে পারে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা। তবে বীজতলা রক্ষায় বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৯ হাজার ৫৫৫ হেক্টর।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ধানের চারায় হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে। কিছু চারা লালচে হয়ে যাচ্ছে। আবার কিছু চারা পচে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে কীটনাশক ছিটিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। পানি দিলেও চারা সবুজ বর্ণে ফিরছে না।

mehe-(3).jpg

মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের কৃষক ইনছান আলী। চলতি বোরো মৌসুমে চার বিঘা জমিতে ধানের চাষ করবেন। কিন্তু বীজতলা নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। বেশ কয়েকদিন ধরেই খুব ঠান্ডায় তার বীজতলা নষ্ট হওয়ার পথে। চারা হলদে হয়ে গেছে। কীটনাশক ছিটিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। ঠিক সময় ধানের চারা পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন ইনছান।

আরেক কৃষক ছাবদার আলী, তিন বিঘা জমিতে ধান চাষের জন্য চারা রোপণ করেছেন। ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডার কারণে তার চারাগুলো নষ্ট হওয়ার পথে। ধানের চারা রক্ষায় বর্তমানে ইউরিয়া সার ও সিয়োভিট প্রয়োগ করছেন। ছাবদার বলেন, ‘চারাগুলো রক্ষা করা না গেলে মহাবিপদে পড়তে হবে।’

সদর উপজেলার গোভিপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল বাকি বলেন, ‘অতিরিক্ত কুয়াশা ও প্রচণ্ড ঠান্ডায় ধানের চারাগুলো লালচে হয়ে যাচ্ছে। ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করেও কাজ হচ্ছে না। দুশ্চিন্তায় আছি।’

mehe-(3).jpg

কৃষক রাফিউল ইসলাম বলেন, ‘কৃষি অফিসের পরামর্শে নলকূপের পানি দেওয়াসহ নানা চেষ্টা করেও বীজতলা রক্ষা করা যাচ্ছে না। চারা কিনে আবাদ করাও কঠিন হয়ে যাবে। কারণ অধিকাংশ কৃষকের একই অবস্থা। তাই বোরো আবাদ কীভাবে করবো সে চিন্তায় আছি।’

কৃষক সামিরুল বলেন, ‘কৃষি অফিসাররা এসে পানি রাখা ও পলিথিন ব্যবহারে পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু খরচ বেড়ে যাওয়ায় অনেকেরই পলিথিন ব্যবহারে আগ্রহ কম। যেসব ছত্রাকনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে তাতে কোনো কাজ হচ্ছে না। শুধু অর্থ অপচয়। আরও কয়েকদিন কনকনে ঠান্ডা ও শৈত্যপ্রবাহ থাকলে অধিকাংশ বীজতলা নষ্ট হয়ে যাবে।’

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক শঙ্কর কুমার মজুমদার জাগো নিউজকে বলেন, বর্তমানে যে আবহাওয়া বিরাজ করছে তাতে বীজতলা ক্ষতির আশঙ্কা আছে। কৃষি বিভাগ থেকে চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বীজতলা রক্ষায় প্রতি রাতে পানি জমিয়ে সকালে তা ছেড়ে দিতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ঘন কুয়াশা থেকে রক্ষায় প্রতি রাতে পলিথিন দিয়ে বেড ঢেকে রাখতে ও ছত্রাকনাশক স্প্রে করারও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে অন্য ফসলের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না।

এসজে/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।