পাঠদান বাদ দিয়ে কর্মশালায় শিক্ষকরা

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি ঈশ্বরদী (পাবনা)
প্রকাশিত: ০৭:৫৭ পিএম, ২৪ জানুয়ারি ২০২৩

পাবনার ঈশ্বরদীতে পাঠদান বাদ দিয়ে ৩১ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ৩ দিনব্যাপী ‘কারিকুলাম বিস্তরণ রূপরেখা ২০২২ পেশাগত মান উন্নয়ন’ শীর্ষক কর্মশালায় যোগদানের অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ঈশ্বরদী উপজেলা শাখার নিজস্ব কার্যালয়ে সমিতির অন্তর্ভুক্ত ৩১ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের অংশগ্রহণে মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারী) এ কর্মশালা শুরু হয়।

পাঠদান বাদ দিয়ে কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষক ও আয়োজকদের নিয়ে এরইমধ্যে উপজেলার সর্বত্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অনিয়মতান্ত্রিকভাবে আয়োজিত এ কর্মশালা বন্ধের নিদের্শ দিয়েছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সেলিম আক্তার।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিএম ইমরুল কায়েস। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ঈশ্বরদী উপজেলা শাখার সভাপতি ফজলুল হক ও সাধারণ সম্পাদক মুক্তার হোসেনসহ সমিতির নেতৃবৃন্দ।

উপজেলার একাডেমিক সুপারভাইজার আরিফুল ইসলাম, মাস্টার ট্রেইনার ও রিয়াজ উদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম, মাস্টার ট্রেইনার ও সাহাপুর আবুল কাশেম উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক সুলতানা রাজিয়াসহ সমিতির অন্যান্য সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষক বলেন, চলতি মাসেই সরকারি উদ্যোগে ৫ দিনব্যাপী এ ধরনের ট্রেনিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপরও হঠাৎ শিক্ষক সমিতির এই কর্মশালার আয়োজনের কোনো প্রয়োজন ছিল বলে মনে হয় না।

এ বিষয়ে উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার আরিফুল ইসলাম বলেন, কর্মশালায় আমন্ত্রিত হয়ে উপস্থিত ছিলাম। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কর্মশালার বিষয়ে অনুমতি দিয়েছে কি না আমার সঠিক জানা নেই।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সেলিম আক্তার জানান, এ ধরনের কর্মশালার আয়োজন অনিয়মতান্ত্রিক। ইন হাউজে মাস্টার ট্রেইনার গিয়ে শিক্ষকদের ট্রেনিং দেবেন। ক্লাস বাদ দিয়ে সমিতি অফিসে ট্রেনিং গ্রহণের বিষয়টি জানার পর বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছি।

পাবনা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রুস্তম আলী হেলালী জানান, সরকারি সিদ্ধান্ত ছাড়া ক্লাস বাদ দিয়ে কোনো সংগঠনের কর্মশালায় শিক্ষকদের অংশগ্রহণের সুযোগ নেই। তবে ছুটির দিনে তারা কর্মশালায় অংশগ্রহণ করতে পারেন। কেন ‘ওয়ার্কিং ডে’তে এমন আয়োজন করা হলো সে বিষয়ে তদন্ত করা হবে। সত্যতা পেলে আয়োজকসহ অংশগ্রহণকারী শিক্ষকদের বিরদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি ফজলুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের যে ট্রেনিং হলো এরই ভিত্তিতে আমরা শিক্ষকদের রিফ্রেসমেন্ট বা মতবিনিময়ের জন্য এ কর্মশালার আয়োজন করেছি। ইনহাউজে শিক্ষকদের আরও ট্রেন্ডআপ করার জন্য ঝালাই করা হচ্ছে। তিন ঘণ্টা করে কর্মশালা হচ্ছে।

ক্লাস বাদ দিয়ে সমিতি অফিসে এ ধরনের কর্মশালা অনুষ্ঠানের অনুমতি প্রসঙ্গে সরকারি নির্দেশনা বা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের অনুমতি নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ইনহাউজ ট্রেইনার হিসেবে আমরা ইউএনও সাহেবের সঙ্গে মতবিনিময় করে করেছি। তিনি বলেছেন ভালো উদ্যোগ, অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবেও উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পি এ ইমরুল কায়েস জানান, সব স্কুল বন্ধ করে কর্মশালা হয়নি, নতুন কারিকুলামে সংশ্লিষ্ট যে পাঠ পরিক্রম বিশেষ করে ‘বাংলা’ আজ উদ্বোধন করা হয়েছে। আগামীকাল থেকে বিদ্যালয়ের পাঠদান শেষে এ কর্মশালা হবে।

শেখ মহসীন/এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।