বাজারে সরবরাহ কম, খুলনায় বেড়েছে মাছের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:৪০ এএম, ২৮ জানুয়ারি ২০২৩

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে নিত্যপণ্যের বাজারে। চাল-ডাল, আটা থেকে শুরু করে মাছ-মাংসের দামও এখন আকাশচুম্বী। বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ ভালো থাকায় কিছুদিন কমেছিল শাক-সবজির দাম। তবে কয়েকদিন ধরে সবজির দামও ঊধ্র্বমুখী। তবে মূল্য বৃদ্ধিতে সবচেয়ে এগিয়ে মাছ। সাধারণ মানুষের প্রাণিজ আমিষের চাহিদা মেটানো মাছ এখন নিম্নবিত্ত শুধু নয় মধ্যবিত্তদেরও নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। তবে মাছের এ অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির জন্য সরবরাহ কম থাকাকেই দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা।

শনিবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে খুলনার কয়েকটি বাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

নগরীর ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজারে মাছসহ নিত্যপণ্য কিনতে আসা স্কুল শিক্ষিকা সাহিদা বেগম মুন্নি অনেকটা হতাশা ব্যক্ত করে জাগো নিউজকে বলেন, এখন আর মাছ কেনার মতো অবস্থা নেই। যে কোনো এক প্রকারের (এক কেজি) মাছের দাম দিয়ে কয়েক কেজি মুরগি (পোল্ট্রি) কেনা যায়। তাই মাসে ৫/৬ দিন মাছ খাই। বাকি দিনগুলো সবজি আর মুরগি দিয়ে চালিয়ে নিতে হয়।

আরও পড়ুন: চিনির দাম আরও চড়া, আদা-রসুন-মরিচও দ্বিগুণ

তিনি বলেন, বর্তমানে এক কেজি রুই মাছ কিনতে গেলেও গুনতে হয় অন্তত ২৫০ টাকা। অন্য মাছের কথা তো ভাবাই যায় না। মাছে এখন বরফের পরিবর্তে যেন আগুন লেগে আছে।

প্রতি বছর শীতের এই সময়টাতে বাজারে মাছের আমদানি কমে যায়, সাগরের মাছও আসে (সরবরাহ হয়) কম। যে কারণে বাজারে আসা মাছের দাম থাকে আকাশচুম্বী বলে জানান মাছ বিক্রেতা রইছ উদ্দিন সরদার।

ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজারে একাধিক মাছ বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারে এখন সামুদ্রিক মাছের বেশ চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে কোরাল (ভেটকি), রিটা, আইড়, ভোলা, রূপচাঁদা, টুনা, ছুরি, লইট্টা, কংকন মাছ পছন্দের শীর্ষে রয়েছে ক্রেতাদের। সামুদ্রিক মাছের পাশাপাশি দেশীয় প্রজাতির মাছের চাহিদাও বেশ। টেংরা, পারশে, রুই, কাতলা মৃগেল, গ্রাসকার্প, সিলভারকার্প মাছও বেশ বিক্রি হচ্ছে। তবে সব মাছের দামই এখন বাড়তি।

আরও পড়ুন: ফের বাড়লো চিনির দাম

মাছ বিক্রেতা গোলাম মোস্তফা জাগো নিউজকে বলেন, শীতের এই সময়ে সাগরে তেমন একটা মাছ পড়ে না। যা পাওয়া যায়, তার বড় অংশ রাজধানীতে চলে যায়। এরপর যা থাকে তাই দিয়ে চলে খুলনার ২৪টি বাজার।

কেসিসি রূপসা পাইকারি মৎস্য আড়তের মেসার্স মদিনা ফিস ট্রেডার্সের পরিচালক মো. আবু মুছা জাগো নিউজকে বলেন, আড়তে এখন সামুদ্রিক মাছ তেমন আসছে না। তিনি বলেন, চলতি মাসের প্রথম দিকে বেশ শীত পড়েছিল। শীতের কারণে জেলেরা সাগর থেকে উঠে আসেন। তারা তেমন মাছ ধরতে পারেননি। বর্তমানে জেলেরা সমুদ্রে অবস্থান করছেন, তারা ফিরলে বাজারে মাছ পাওয়া যাবে।

তবে শুধু সমুদ্রের মাছ নয়, এই সময়ে অন্যান্য মাছেরও আমদানি কম থাকে বলেও জানান আবু মুছা।

আরও পড়ুন: সার্কের ৫ দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি ১২ হাজার ৬৬৬ মিলিয়ন ডলার

টুটপাড়া জোড়াকল বাজারের মাছ বিক্রেতা নিয়ামত আলী, বাদশা ও নান্টু জানান, বর্তমানে এক কেজি ওজনের রুই, কাতলা ও মৃগেল মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৮০ টাকা, গ্রাসকার্প ১৬০ টাকা, ভেটকি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। পাবদা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি। দেশী কই মাছ ৬০০ টাকা, শোল ৭০০ টাকা, বাগদা চিংড়ি ৬০০ থেকে ৮০০ কখনো কখনো এক হাজার ২০০ টাকাও প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে।

শুধু মাছ নয়, আলু এবং পেঁয়াজের দামও কিছুটা বেড়েছে খুলনার বাজারে। পাশাপাশি শীতকালীন সবজির দামও কিছুটা বেড়েছে বলে জানান বিক্রেতারা।

আলমগীর হান্নান/কেএসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।