পাঠদানের সব কার্যক্রম অ্যাপে, বানালেন ব্রাহ্মণপাড়া ইউএনও

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুমিল্লা
প্রকাশিত: ০৮:৫১ পিএম, ২৯ জানুয়ারি ২০২৩

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় শিক্ষার্থীদের জন্য অ্যাপভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু করে সাড়া ফেলেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল রানা। রুটিন থেকে শুরু করে লেসন প্ল্যান, শিক্ষা সহায়ক ডিজিটাল উপকরণসহ শিখন কার্যক্রমের পুরোটাই চলছে এ অ্যাপের মাধ্যমে।

‘শিক্ষায়তন’ নামের এ লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম একটি স্যাস (সফটওয়্যার অ্যাজ এ সার্ভিস) মডেল অনুসারে তৈরি করা ই-সার্ভিস অ্যাপ্লিকেশন। পুরো সিস্টেমটির স্পেসিফিকেশন ডিজাইন করেছেন ইউএনও। এ ডিজাইনটিকে বাস্তবায়ন করতে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন পরে বিজনেস অ্যাকসিলারেট বিডি নামের একটি টেকনোলজি পার্টনার নিযুক্ত করে, যারা এটি ডেভেলপ করেছেন।

২০২২ সালের ১৫ অক্টোবর ডিজিটাল এ শিক্ষা কার্যক্রম প্রথমে ব্রাহ্মণপাড়ার দুটি স্কুলে শুরু হয়। পরে উপজেলায় আরও একটি স্কুল যোগ করা হয়।

স্কুল তিনটি হলো ব্রাহ্মণপাড়া শিদলাই আশরাফ স্কুল, ভগবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এবং ওশান হাইস্কুল। কুমিল্লা সিটি কপোরেশন এলাকায় প্রক্রিয়াধীন দুটি স্কুল হলো কুমিল্লার কালেক্টরেট স্কুল ও কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

এ প্ল্যাটফর্মে স্কুলের সব কার্যক্রম প্রধান শিক্ষক ওয়েব প্ল্যাটফর্মে এবং শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মোবাইল অ্যাপে করতে পারবেন। শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিটি কোর্সে আলাদাভাবে সাজানো আছে। কোর্সের ভেতরে সেই কোর্সে সব ক্লাসের আলাদা ডায়নামিক সেকশন আছে, যেখানে শিক্ষকরা অতিরিক্ত লার্নিং ম্যাটেরিয়াল জমা করতে পারবেন এবং শিক্ষার্থীরা তা দেখতে পাবে।

শিক্ষকরা অ্যাপে লেকচার নোট আপলোড, শিক্ষার্থীদের গ্রুপে বিভক্ত, ক্লাসে নোটিফিকেশন পাঠানো, অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া ও জমা নেওয়া এমনকি গ্রেডও বসাতে পারবেন। ক্লাসে বসে সফটওয়্যার ব্যবহার করে হাজিরা নিতে পারবেন শিক্ষকরা।

এ বিষয়ে ভগবান সরকারি স্কুলের বিজ্ঞান শিক্ষক মহিউদ্দিন পলাশ বলেন, ‘শিক্ষায়তন’ এমন একটি সফটওয়্যার যেখানে এককথায় শ্রেণি কার্যক্রমের সবকিছু রয়েছে।

জানতে চাইলে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল রানা জাগো নিউজকে বলেন, ‘লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের ধারণাটি বেশ পুরোনো। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ক্যানভাস, মুডল, স্কুলজি, ব্ল্যাকবোর্ড ইত্যাদি নানা ধরনের লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার আছে। এগুলো স্কুল ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার থেকে কিছুটা ভিন্ন ধাঁচের। তবে নানা ধরনের সফটওয়্যারের ডিজাইন বিশ্লেষণ করে, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে এবং স্থানীয় চাহিদা নিরূপণ করে ভিন্ন আঙ্গিকে সফটওয়্যারটি প্রস্তুত করা হয়েছে। সফটওয়্যার প্রস্তুত ও স্কুলে বাস্তবায়নের এ উদ্যোগের প্রধান পৃষ্ঠপোষক কুমিল্লার সাবেক ও বর্তমান জেলা প্রশাসক।

তিনি আরও বলেন, পর্যায়ক্রমে আমরা কুমিল্লার সব স্কুলে এটি বাস্তবায়ন করতে চাই। পরবর্তীসময়ে সরকার বড় পরিসরে সারাদেশে এটি ছড়িয়ে দিতে পারবে বলে আশা করি।

কুমিল্লার সাবেক জেলা প্রশাসক ও বর্তমানে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, আমি জেলা প্রশাসনে যোগ দেওয়ার পর থেকেই প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে ও চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কাজ করে আসছি। কাজ করতে গিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাপনাকে যুগোপযোগী করে তোলার কথা মাথায় আসে। ব্রাহ্মণপাড়া ইউএনও সোহেল রানা শিক্ষাক্ষেত্রে লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আধুনিকায়নের কথা বললে আমরা সেই অভাব পূরণের লক্ষ্যে লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম তৈরি করার উদ্যোগ নেই।

বর্তমানে www.sikkhayton.gov.bd ইউআরএলের মাধ্যমে প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করা যাবে এবং গুগল প্লে স্টোরে ‘শিক্ষায়তন’ অথবা ‘sikkhayton’ নামে অ্যাপটি পাওয়া যাবে।

শিক্ষায়তন নেটওয়ার্কে যুক্ত হতে চাইলে আগ্রহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন অথবা ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা প্রশাসন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

জাহিদ পাটোয়ারী/এসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।