বেদে শিশুদের সপ্তাহে একদিন পাঠদান, তাতেই খুশি বাবা-মা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি বরগুনা
প্রকাশিত: ০৪:৪৪ পিএম, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
সপ্তাহে একদিন বেদে শিশুদের পড়ান স্বেচ্ছাসেবীরা

অডিও শুনুন

দেশের মোট জনসংখ্যার একটি ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর অংশ বেদে। জীবনমান উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি চালু থাকলেও বরগুনায় বেদে শিশুরা পিছিয়ে আছে শিক্ষার দিক থেকে। তাই সপ্তাহে একদিন শিক্ষার আলো ছড়াতে বেদেপল্লিতে আসে ‘আশার আলো পাঠশালা কেন্দ্র’।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বরগুনায় সদর উপজেলার গৌরিচন্না ইউনিয়নের ভূতমারা এলাকায় ২৫টি বেদে পরিবার বাস করে। তাদের মধ্যে অনেকে এক বছর থেকে দশ বছর পর্যন্ত বসবাস করছে এখানে। বংশ পরম্পরায় বেদে পেশা যারা টিকিয়ে রেখেছেন তাদের অনেকেরই নেই শিক্ষাজ্ঞান।

বেদে শিশুদের সপ্তাহে একদিন পাঠদান, তাতেই খুশি বাবা-মা

তাই এখানকার বেদে সন্তানদের শিক্ষার জ্ঞান দিতে স্বপ্ন পূরণ যুব ফাউন্ডেশন নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সপ্তাহে শুক্রবার ছুটে আসে। যার নাম দেওয়া হয় ‘আশার আলো পাঠশালা কেন্দ্র’।

ঢাকার বিক্রমপুর থেকে এসে একবছর ধরে দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে বরগুনার এ বেদেপল্লিতে আছেন মো. সাগর। তিনি বলেন, ‘পেটের দায়ে জেলায় জেলায় ঘুরে বেড়ান। ইচ্ছে থাকলেও ছেলেমেয়েদের স্কুলে ভর্তি করতে পারি না।’

যন্তনা বেগম বলেন, ‘আমাদের মধ্যে যাদের একটু টাকা-পয়সা আছে তারা ছেলেমেয়েদের পড়ায়। কিন্তু যারা আর্থিক অনটনে থাকে তাদের সন্তানদের কাজে নামিয়ে দেওয়া হয়। সংগঠনটি আমাদের সন্তানদের সপ্তাহে একদিন পড়াতে আসে। এতে কিছুটা হলেও তারা শিখতে পারছে।’

বেদে শিশুদের সপ্তাহে একদিন পাঠদান, তাতেই খুশি বাবা-মা

সাত বছর ধরে পল্লিতে থাকা সর্দারণী সামসুন্নাহার বলেন, ‘একটি ঝুপড়ি ঘরে আমাদের সন্তানদের পড়ায় সংগঠনটি। যারা অল্প সময়ের জন্য এ পল্লিতে আসে তাদের ছেলেমেয়েরাও এখানে পড়ার সুযোগ পায়। আমাদের মধ্যে অনেকেই ইচ্ছা থাকলেও আর্থিক সমস্যা এবং ভাসমান হওয়ায় ছেলেমেয়েদের পড়াতে পারছে না।’

স্বেচ্ছাসেবী তাইয়েবা ইসলাম বলেন, নিজেদের টাকায় বই-খাতা, কলম কিনে বেদে শিশুদের পড়াচ্ছি। অনেক সময় শিশুদের আগ্রহ বাড়াতে তাদের নাশতাও দেই।

এ বিষয়ে স্বপ্ন পূরণ যুব ফাউন্ডেশনের সভাপতি হাদিউর রহমান ধ্রুব বলেন, শহরের বিভিন্ন জায়গায় বেদে শিশুদের হাত পেতে ভিক্ষা করতে দেখি। প্রথমে পাঁচ স্বেচ্ছাসেবী মিলে তাদের পড়ানোর উদ্যোগ নেই। এখন আমাদের সদস্য সংখ্যা ৪০ জন। সপ্তাহে একদিন শিশুদের পড়াই। কিন্তু দেখা যায় এ সপ্তাহে যাদের পেয়েছি আগামী সপ্তাহে তাদের অনেকেই থাকে না। ভাসমান হওয়ায় চলে যায় আবার নতুন কেউ আসে।

এসজে/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।