সরকারি ঘর ৪ লাখ টাকায় বিক্রি করে দিলেন উপকারভোগী

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি শেরপুর
প্রকাশিত: ০৯:২৮ পিএম, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

শেরপুরে সরকারের দেওয়া দুর্যোগসহনীয় ঘর বিক্রি করে দিয়েছেন এক উপকারভোগী। বরাদ্দের জমিসহ ওই ঘর চার লাখ টাকায় বিক্রির ঘটনাটি সম্প্রতি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। অবৈধভাবে সরকারি স্থাপনা বিক্রির কথা স্বীকারও করেছেন অভিযুক্ত উপকারভোগী। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

নকলা উপজেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, টিআর-কাবিটা কর্মসূটির আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ‘জমি আছে ঘর নেই’ প্রকল্পের আওতায় একটি সরকারি ঘর বরাদ্দ পান নকলা উপজেলার বানেশ্বর্দী ইউনিয়নের হতদরিদ্র হাতেম আলী। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ওই ঘর নির্মাণে ব্যয় হয় দুই লাখ ৫৮ হাজার টাকা।

jagonews24

হাতেম আলীর মৃত্যুর পর তার ছোট ছেলে রিকশাচালক শহিদুল ইসলাম তার পরিবার নিয়ে সেই ঘরে বসবাস শুরু করেন। তিন বছরের ব্যবধানে গত ১২ জানুয়ারি জমিসহ সরকারি ঘরটি বিক্রি করে দেন শহিদুল। স্থানীয় মৃত সুলতান মিয়ার স্ত্রী হাসনা বেগম ওরফে বিউটি চার লাখ টাকায় সাব কবলায় জমিসহ ঘরটি কিনে নেন।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে হাতেম আলীর ছেলে শহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে তার স্ত্রী মোর্শেদা বেগম বলেন, ‘সরকারি কোনো জিনিস বিক্রি করা যায় না সেটা জানা ছিল না। না জেনে ঘরটি বিক্রি করে অন্যায় করেছি। তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা হাতে পাইছি। এখন আমরা টাকা ফিরিয়ে দিয়ে আমাদের জায়গা ও ঘর আমরাই রাখবো।’

জমিসহ ঘরটির ক্রেতা হাসনা বেগম ওরফে বিউটি বলেন, ‘জমি ও ঘরের মালিক এটি বিক্রি করেছেন। তাই আমি কিনে নিছি। আর আমি জানি না, এইটা সরকারি ঘর। জানলে হয়তো কিনতাম না।’

https://cdn.jagonews24.com/media/imgAllNew/BG/2019November/sher-3-20230205212815.jpg

স্থানীয় শামীম মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘সরকারি ঘরটি পাইয়ে দিতে আমি সব ধরনের সহযোগিতা করেছি। একবার শুনলাম তার ছেলে জায়গা ও ঘরটি বিক্রি করবে। যখন এমন খবর জানলাম পরে আমি না করলাম, কিন্তু কে শোনে কার কথা। গোপনে গোপনে জমি ও ঘর বিক্রি করে দিছে। এটাতো শুধু অন্যায় না বরং সরকারের বদনাম।’

নকলার ৫ নম্বর বানেশ্বর্দী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মনির হোসেন বলেন, ‘আমাকে যখন বললো ঘর বিক্রির বিষয়ে আমি না করেছি দুই পক্ষকেই। পরে আর আমার সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেনি। আজকে শুনলাম গোপনে গোপনে জমি ও সরকারি ঘর বিক্রি করে দিছে। আসলে এটি অন্যায় হয়েছে।’

এ ঘটনায় নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বুলবুল আহমেদ বলেন, ‘তথ্যটি আগে জানতাম না, আপনাদের মাধ্যমে জানলাম। যদি এমন কেউ করে থাকেন তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

ইমরান হাসান রাব্বী/এসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।