পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন, অচলাবস্থা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি পটুয়াখালী
প্রকাশিত: ০৮:৫১ পিএম, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

অডিও শুনুন

নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. মোহাম্মদ কামরুল ইসলামের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

গত ৩০ জানুয়ারি থেকে টানা ১০ দিন ধরে চলা কর্মবিরতির ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে কার্যত অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে দেখ যায়, প্রশাসনিক ভবনের সামনে শত শত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বসে আছেন। তাদের পেছনে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া সম্বলিত ব্যানার টাঙানো। সড়কের সামনে দুইদিকে দুটি মাইক লাগানো হয়েছে। একের পর এক কর্মকর্তারা বক্তব্য দিচ্ছেন।

গত কয়েকদিন থেকে নিজ দপ্তরের কাজ না করে এভাবেই আন্দোলন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে আন্দোলনকারীরা যখন বক্তব্য দিচ্ছেন সেসময় উপাচার্য কিংবা রেজিস্ট্রার কাওকেই তাদের কক্ষে পাওয়া যায়নি।

এর আগে সোমবার পবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্তের কাছে আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য লিখিত চিঠি দিয়েছেন। এতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, কর্মচারী পরিষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং বঙ্গবন্ধু কর্মচারী পরিষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যৌথভাবে সই করেন।

লিখিত ওই চিঠিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মতামত ও দাবির ভিত্তিতে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের কর্মে অদক্ষতা এবং দায়িত্ব পালনে উপযুক্ত নয় এমন প্রতীয়মান হওয়ায় ড. কামরুল ইসলামকে অব্যাহতির জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ ছাড়াও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অন্য দাবিগুলো হচ্ছে, অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়নে আপডেট কমিটির প্রতিবেদন রিজেন্ট বোর্ডের সভায় অনুমোদন, সহকারী রেজিস্ট্রার পদের স্কেল ষষ্ঠ গ্রেড এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদের স্কেল চতুর্থ গ্রেডে উন্নীত করা, অরগানোগ্রাম কমিটিতে অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি রাখা, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে কর্মরত অভিযুক্ত দুর্নীতিবাজদের প্রশাসনের বাইরে বদলি, প্রতি অর্থবছরে তিনটি বাছাই বোর্ড এবং তিনটি রিজেন্ট বোর্ডের সভা আহ্বান করা।

jagonews24

এ বিষয়ে অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ওয়াজ কুরুনী বলেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতিপরায়ণ একটি সিন্ডিকেট সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ন্যায্য দাবি আদায়ে প্রধান অন্তরায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান রেজিস্ট্রার একজন দুর্নীতিপরায়ণ মানুষ। তিনি নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্যসহ সব অনিয়ম-অপকর্ম নিয়ন্ত্রণ করছেন। ধীরে ধীরে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানে পরিণত করছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না এই রেজিস্ট্রারের পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া না হবে ততক্ষণ আন্দোলন চলবে।

বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইদুর রহমান জুয়েল বলেন, আমাদের দাবি আদায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো উদ্যোগ না নিলে আমরা ভিসিকেও অবরুদ্ধ করতে পিছপা হবো না। যেকোনো মূল্যে আমাদের ন্যায্য দাবি আদায় করে নেবো।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পবিপ্রবি রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ড. মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, আমি কোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত নই। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর এ পর্যন্ত মাত্র চারজন শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে, যেখানে শতভাগ স্বচ্ছতার ভিত্তিতে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট ছাত্রদের নেওয়া হয়েছে। এছাড়া টেন্ডার কমিটিতে আমি সদস্য নই, সেক্ষেত্রে এ বিষয়ে আমার কোনো প্রভাব বিস্তারের সুযোগ নেই।

তবে কেন আপনার বিরুদ্ধে এত অভিযোগ, এমন প্রশ্নের জবাবে কামরুল বলেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নেতারা তাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন না করতে পেরে এখন আমার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা অভিযোগ করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পবিপ্রবি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত বলেন, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান মিলবে বলে আশা করছি।

আব্দুস সালাম আরিফ/এমআরআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।